সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেমের অনুমতি দিল স্বাস্থ্য ভবন। শুনানির ২৪ ঘণ্টা আগেই মিলল অনুমতি। আরজি কর-কাণ্ডে দুটি পৃথক মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। একটি মামলায় জামিন পেয়ে যান তিনি। তবে অপর মামলা থেকে অব্যাহতি না পাওয়ায় আপাতত জেলেই আছেন সন্দীপ ঘোষ।
আরজি কর মামলায় গত বছরের নভেম্বরে চার্জশিট জমা পড়লেও স্বাস্থ্য ভবন এনওসি না দেওয়ায় ঝুলেছিল চার্জগঠন। সুপ্রিম কোর্টেও বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এদিকে কেন চার্জ গঠনের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে লাগাতার সরব ছিল বিরোধী চিকিৎসক সংগঠনগুলি।
বারবার বলেও কাজ না হওয়ায় আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা করেন। মঙ্গলবার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই সোমবার সন্ধ্যায় সিবিআই-কে এনওসি দিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। অর্থাৎ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জগঠনে আর কোনও বাধা নেই। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সাতদিনের মধ্যে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতকে চার্জ গঠন করে দ্রুত শুনানির নির্দেশ দেন।
এরপরই মঙ্গলবার আদালতে বিষয়টি জানায় সিবিআই। অন্যদিকে ইডি-র আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁরা ইসিআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছেন। মঙ্গলবার হাইকোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চে মুখ বন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেয় সিবিআই।
এদিকে এদিন এএসজি আদালতকে জানান, সুপ্রিম কোর্টে আরজি করের খুন ধর্ষণ মামলার সঙ্গেই এই দুর্নীতির মামলা চলছে। প্রসঙ্গত, গত বছর ২৩ অগাস্ট হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি করের দুর্নীতি মামলার তদন্ত হাতে নেয় সিবিআই। পরে সুপ্রিম কোর্ট তাতে শিলমোহর দেয়। গত বছর ২৯ নভেম্বর চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই।
বিচারপতি এদিন জানান, এই মুহূর্তে এই আদালতের এই মামলায় আর কিছু করার নেই। ইডি-র তরফে আইনজীবী জানান, ২২ জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। বেশ কয়েকজনকে জেরা করা হয়েছে। অভিযুক্ত সরকারি অফিসারদের বিরুদ্ধে ট্রায়াল শুরুর জন্য কনসেন্ট পেয়েছে সিবিআই। নিম্ন আদালতকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রায়াল শুরু করে যত দ্রুত সম্ভব বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের।
তবে এদিন ইডি- র ভূমিকায় অসন্তুষ্ট হতে দেখা গেল বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষকে। বিচারপতি বেশ ক্ষোভের সঙ্গেই জানান, ‘ইডি চার্জশিটও দেয় না আর বিচারপ্রক্রিয়া বা ট্রায়ালও শুরু হয় না।’ প্রসঙ্গত আরজি কর মামলায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চার্জশিট জমা না দেওয়ায় ইতিমধ্যেই জামিন পেয়েছেন সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। ২৯ শে নভেম্বর আলিপুরে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। আগামী ৩০ শে জানুয়ারি আলিপুরে পরবর্তী শুনানি রয়েছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ ইডির বক্তব্য শোনার পরই নিম্ন আদালতকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রায়াল শুরু ক’রে, যত দ্রুত সম্ভব বিচার শেষ করার নির্দেশ দেন।