বাগদার তৃণমূল প্রার্থীর জন্য শেষ লগ্নের প্রচারে সাংসদ পার্থ

বাগদা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে জয়যুক্ত করতে ভোটারদের কাছে করজোড়ে আবেদন করলেন ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। সোমবার উপনির্বাচনের প্রচারের শেষলগ্নে বাগদায় গিয়েছিলেন সাংসদ। ২৫ বছর বয়সি তৃণমূল প্রার্থীকে পাশে নিয়ে তাঁর আবেদন, ”আমাদের একটা সুযোগ দিন।” পাশপাশি, দলের কেউ কোনও অন্যায় করে থাকলে তাঁদের সবার হয়ে ক্ষমা চান তৃণমূল সাংসদ।

বুধবার উপনির্বাচন হবে বাংলার চারটি কেন্দ্রে। নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ, উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা, কলকাতার মানিকতলা এবং উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। এর মধ্যে মানিকতলায় বিধায়ক সাধন পাণ্ডের মৃত্যুর কারণে উপনির্বাচন হচ্ছে। রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ এবং বাগদায় ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ী তিন বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, মুকুটমণি অধিকারী ও বিশ্বজিৎ দাস পদত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে লোকসভায় প্রার্থী হওয়ায় আবার ভোট অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। বাগদায় এ বার তৃণমূল প্রার্থী করেছে ঠাকুরবাড়ির সদস্য তথা রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের মেয়ে মধুপর্ণা ঠাকুরকে।তাঁর সমর্থনে আষাঢ়ু গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙ্গুলিয়ায় বুথ বৈঠক করতে গিয়ে একটা প্রকাশ্য সভা থেকে পার্থ বলেন, ”লোকসভা ভোটে ২৯টি আসন দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনটে সিটে আমরা অল্পের জন্য হেরেছি। আমি বাগদার মানুষের কাছে আবেদন

করছি— আপনারা ২০১৪, ২০১৬, ২০২১, ২০২৪ সালে আমাদের হারিয়ে দিয়েছেন। এ বার আমাদের প্রার্থীকে জয়ী করুন।”

বাগদা এলাকায় উন্নয়ন প্রসঙ্গে বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন পার্থ। তিনি বলেন, ”রাস্তা দিয়ে আসছিলাম। এক জন বললেন, ‘দাদা, রাস্তাটা ঠিক করে দিন।’ আমি বললাম, ‘রাস্তা ভাল করার দায়িত্ব তো আমায় দেননি। বিজেপিকে দায়িত্ব দিয়েছেন আপনারা।”’ তৃণমূল সাংসদের সংযোজন, ”আমাকে এক বার দায়িত্ব দিন। দেখুন, কেমন কাজ করি।” মধুপর্ণাকে নিয়ে পার্থ বলেন, ”মাত্র ২৫ বছর কয়েক দিন বয়স ওর। এ বাড়ি, ও বাড়ি দৌড়ে বেড়াবে। দয়া করে এক বার কাজের সুযোগ দিন। হাতজোড় করে বলছি।” তার পর দু’হাত জড়ো করে পার্থ বলে চলেন, ”আমার দলের কেউ কোনও অন্যায় করে থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক জন সৈনিক

হিসাবে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। আর যদি আমি কোনও ভুল করে থাকি, তার শাস্তি আমায় দিন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নয়।”

উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের নিরিখে রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ এবং বাগদা বিধানসভা আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। মতুয়া অধ্যুষিত বাগদা আসনে জয়ের সম্ভাবনা তুলনায় বেশি হওয়ায় চাহিদাও বেশি ছিল। বিজেপি ওই কেন্দ্রে বিনয় বিশ্বাসকে প্রার্থী করার পর প্রার্থীবদলের দাবিতে পথে নামে পদ্মশিবিরের কর্মীদের একাংশ। বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা-কর্মীদের সমর্থনে উপনির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন সত্যজিৎ মজুমদার।

২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে বাগদায় তৃণমূল জয়ী হয়। ২০১৬ সালে ওই কেন্দ্রে জেতে কংগ্রেস। ২০২১ সালে তৃণমূলত্যাগী বিশ্বজিৎ দাসকে প্রার্থী করে বিজেপি। তিনি জয়ী হন। তবে পরে আবার

ফিরে আসেন তৃণমূলে। তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে গিয়ে পার্থ বলেন, ”দু’বছর পরে বিধানসভা ভোট। তখন যদি মধুপর্ণার কাজ ভাল-না লাগে সরিয়ে দেবেন। কিন্তু, একটা বার কি আমরা সুযোগ পেতে পারি না? দেবেন না একটা সুযোগ? একটা সুযোগ দিন। মধুপর্ণা ভাল কাজ করবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 5 =