পাকিস্তানি চরের হাতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ভক্তবংশী ওঝাকে শনিবার আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের জন্য আবেদন জানান সরকারি আইনজীবী। এরপরই আদালত ধৃত ভক্তবংশীর ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এদিকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফের হাতে ধৃত দ্বারভাঙার বাসিন্দা ভক্তবংশী ওঝাকে কলকাতা এসটিএফের পক্ষ থেকে জেরা করা হতেই সামনে আসে বেশ কিছু তথ্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তবংশীর সঙ্গে আলাপ হয় এক মহিলার, যার প্রোফাইলে নাম ছিল আরুশি সিং। ভক্তবংশীর কাছে নিজেকে পঞ্জাবের অমৃতসরের বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন ওই মহিলা। এদিকে সেনা সূত্র মারফত খবর, তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন ওই মহিলা আদতে একজন পাকিস্তানি ইনটেলিজেন্স অফিসার।
সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ভক্তবংশীর সঙ্গে ওই মহিলার পরিচয় হওয়ার পর দু’জনের মধ্যে ভিডিয়োয় ও চ্যাটে হানি ট্র্যাপে মধ্যে ফেঁসে যান ভক্তবংশী। জেরায় তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই ব্যক্তিকে হানি ট্র্যাপ করে বিভিন্ন নম্বর ও তথ্য হাতিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছিল। শুধু ওই মহিলার সঙ্গেই নয়, এর পাশাপাশি মহিলার বাবা পরিচয় দেওয়া এক পুরুষ কণ্ঠের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন বলে জানান ভক্তবংশী। সঙ্গে ভক্তবংশী এও জানায়, দিল্লির সেনা ছাউনি সহ বিভিন্ন ভাইটাল ইনস্টলেশনের ছবি ও ভিডিয়োর জন্য বলেছিল আরুশি সিং বলে পরিচয় দেওয়া ওই মহিলা। আর এসবের জন্য ভক্তবংশীকে মোবাইলে একটি সফ্টওয়্যারও ডাউনলোড করতে বলা হয় বলে এসটিএফ সূত্রে খবর। তদন্তকারীদের দাবি, ওই সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে কোনও ছবি তোলা হলে, সেই ছবি কোথায় তোলা হয়েছে, সেটি জানা যায়। এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, দিল্লি থেকে কলকাতায় চলে আসার পরেও ওই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ধৃত ব্যক্তির। এদিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
এদিন অভিযুক্তকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে সরকার পক্ষের আইনজীবী জানান, ‘দেশ বিরোধী কাজের অভিযোগ উঠেছে। এই অপরাধের সাজা ১৪ বছরের কারাদণ্ডের উল্লেখও আছে ভারতীয় দণ্ডধারায়। কলকাতা এসটিএফ সূত্রে খবর, বিভিন্ন গোপন জায়গা ও প্রতিষ্ঠানের ছবি সহ তথ্য পাকিস্থানের সঙ্গে শেয়ার করেছেন এই ভক্তবংশী। এর সঙ্গে আরও অনেকে যুক্ত আছে, জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে হবে বলেও জানানো হয়েছে কলকাতা পুলিসের তরফ থেকে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মোবাইল।এরপর ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে। কারণ, তদন্তকারী আধিকারিকদের ধারনা, সব ভাল করে খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা আছে।’