শুক্রবার বিকেলে কলকাতার রাজপথে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলে পা মিলিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হতে হয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ সহ ১৬ জনকে। এরপর এক রাত পুলিশ লকআপে কাটিয়ে শনিবার ব্যক্তিগত ৫০০ টাকার বন্ডে জামিন পান ভাস্কর। একইসঙ্গে জামিন পান যে ১৬ জন আন্দোলনকারীকে শুক্রবার গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁরা প্রত্যেকেই।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, শুক্রবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ভাস্কর ঘোষ-সহ ১৬ জন আন্দোলনকারীকে শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে বিচারক প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করেন। মিছিলে নেমে গ্রেফতার হওয়া আন্দোলনকারীদের পক্ষে এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন কৌস্তভ বাগচি। তিনি আন্দোলনকারীদের জামিনের জন্য সওয়াল করেন। অন্যদিকে সরকারি আইনজীবী আবার ধৃত আন্দোলনকারীদের জেল হেফাজতের জন্য আর্জি জানান। সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগ তোলেন তিনি। এর পাশাপাশি রাস্তা বন্ধ করার অভিযোগ ও সাধারণ মানুষের জন্য সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি।
অন্যদিকে কৌস্তভ বাগচি আবার যুক্তি দেখান, ‘অনেক সময় কর্মসূচির অনুমতি পাওয়া পর্যন্ত যায় না। পুলিশের কাছে আন্দোলন করতে চাইলে অনুমতি দেয় না। গণতান্ত্রিক আন্দোলন করা হবে, সে অধিকারওকেড়ে নেওয়া হচ্ছে।’ দুই পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর বিচারক ১৬ জনকেই ৫০০ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন মঞ্জুর করা হয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেলে ধর্মতলা চত্বরে মিছিলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির পর প্রিজন ভ্য়ানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভাস্কর ঘোষ-সহ মোট ১৬ জন+কে। এরপর রাতে লালবাজারের সামনে একপ্রস্থ বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে শুক্রবারের এই ঘটনায় শাসকদলকে বিদ্ধ করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি মনে করিয়ে দেন, সত্তরের দশকের সেই জনপ্রিয় স্লোগান, ‘পুলিশ তুমি যতই মারো, মাইনে তোমার ১১২।’ সঙ্গে এও বলেন, সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ মনে করিয়ে দেন, রাজ্য পুলিশের কর্মচারি হিসেবে তাঁরাও তাঁদের প্রাপ্য ডিএ পাচ্ছেন না। এরপরও তাঁরা চাকরি প্রার্থী থেকে শুরু করে ডিএ নিয়ে যাঁরা আন্দোলন করছেন তাঁদের মারধর করছেন। এদিকে এদিনের এই ঘটনায় মুখ খোলেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষও। তিনি জানান, ‘এদিনের এই মিছিলকে যেভাবে পুলিশ থামিয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের আটক করেছে তা বেআইনি। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও কটাক্ষ করে জানান, ক্ষমতায় আসার পর থেকে পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ঠুর ব্যবহারকে কাজে লাগাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এতে তাঁর হতাশাই ধরা পড়ছে। কারণ, তিনি ভয় পাচ্ছেন যে তাঁকে ক্ষমতার থেকে খুব দ্রুত সরিয়ে দেওয়া হবে।’ এরপর শনিবার ভাস্কর ঘোষদের জামিন মিলতেই কোর্ট চত্বরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা।

