বেলেঘাটার বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের খুনের মামলায় নতুন মোড়। জামিনের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলেন নারকেলডাঙ্গা থানার দুই পুলিশ আধিকারিক। আদালত সূত্রে খবর, মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
অভিজিৎ সরকারের খুনের মামলায় অভিযুক্ত এক পুলিশকর্মী এবং এক হোমগার্ড বর্তমানে জেলবন্দি। গত ১৮ জুলাই থেকে তাঁরা রয়েছেন জেল হেফাজতে। এদের জামিনের আর্জি জানিয়েই রাজ্যের উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন আইনজীবীরা। তবে কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, এটি জামিন মামলা হলেও মৃতের পরিবারকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাঁদেরও বক্তব্যে জামিন মামলায় গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, ইন্সপেক্টর রত্না সরকার, হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের গ্রেফতারের ঘটনায় এই রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আগামী শুক্রবারের মধ্যে সিবিআইকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ। ওই দিনই ফের এই মামলার শুনানি হবে।
সূত্রের খবর, শুনানির আগে গোটা রিপোর্ট দেখার জন্য হাইকোর্টে আর্জি জানিয়েছিল সিবিআই। তবে রিপোর্টটা দেওয়ার জন্য এক সপ্তাহের সময় চায় সিবিআই। তবে সাতদিন নয়, চারদিনেরসময়সীমাবেঁধেদেয়কলকাতাহাইকোর্ট।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক হিংসা। সেই সময় বেলেঘাটায় খুন হন বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। ওই ঘটনার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সিবিআই প্রথমে একটি চার্জশিট জমা দিলেও তদন্তে উঠে আসে আরও কিছু তথ্য। তার ভিত্তিতেই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা পড়ে আদালতে।
অভিজিৎ সরকার খুনের ওই মামলায় ৩১ জুলাই অবধি জেল হেফাজত হয়েছে নারকেলডাঙা থানার প্রাক্তন ওসি শুভজিৎ সেন, সাব ইন্সপেক্টর রত্না সরকার ও হোমগার্ড দীপঙ্কর দেবনাথের। ঘটনার পর তদন্ত প্রক্রিয়ায় তথ্য–প্রমাণে লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘রক্ষকই যদি ভক্ষক হয় তাহলে সমাজ কী করবে!’
এই ঘটনায় সিবিআই চার্জশিটে তৃণমূল বিধায়ক পরেশ পাল, কাউন্সিলর স্বপন সমাদ্দার এবং পাপিয়া ঘোষের নাম রয়েছে। আর এই মামলায় গ্রেফতার হতে পারেন এই আশঙ্কায় তাঁরা ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েওছিলেন আগাম জামিনের জন্য। সেই মামলাতে আপাত স্বস্তি মিলেছে তাঁদের।