গত এক মাসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বেআইনি সামগ্রী উদ্ধার ২১৯ কোটির, এগিয়ে দক্ষিণ কলকাতা

এমসিসি অর্থাৎ আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার একমাসের মাথায় শুধু পশ্চিমবঙ্গ থেকেই আটক হল প্রায় ২১৯ কোটি টাকার বেআইনি সামগ্রী । যার মধ্যে শুধু দক্ষিণ কলকাতা থেকেই উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২৫কোটি টাকার সামগ্রী। যা সর্বকালের রেকর্ডই নয়, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে আয়কর, ডিরেক্টরেট অফ রেভেনিউ ইন্টালিজেন্সের তরফ থেকে এও জানানো হয় যে, আটকের পরিমাণ আরও বাড়তো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই নিয়োগ থেকে রেশন দুর্নীতি, অনলাইন লটারি-সহ একধিক মামলায় ইডি, সিবিআই এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে আয়করও ধারাবাহিক অভিযান চালোনোর ফলে কালো টাকার ব্যবসায়ীরা কিছুটা সতর্ক। প্রসঙ্গত, ভোট ঘোষণার পর পরই আয়কর একটি মামলায় দক্ষিণ কলকাতার এক ছাতু ব্যবসায়ীর অফিস থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করে। এই টাকার উৎসের কথা সংস্থাটি জানাতে পারেনি বলে আয়কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মেটিয়াবুরুজ-সহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় আয়কর দফতর থেকে আলাদা করে তল্লাশি চালানো হয়। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, দার্জিলিং। পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ ও বাঁকুড়াও পিছিয়ে নেই।

এদিকে নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গে ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় এজেন্সিগুলি অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা উদ্ধার করেছিল। আটক করা হয়েছিল ৪ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা মূল্যের মদ আর সাড়ে চার কোটি টাকা মূল্যের মাদক। এরপর ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে এক লাফে তা বেড়ে যায়। শুধু ৬৫ কোটি ৫৯ লক্ষ কালো টাকা আটক করা হয়েছিল। দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে টেক্কা দিয়ে ভোট পর্বে বেআইনি কালো টাকা উদ্ধারে চতুর্থ স্থান দখল নিয়েছিল। ভোট পর্বের এই তল্লাশি অভিযানে টাকা থেকে মদ, মাদক, সোনা-সহ উদ্ধার হওয়া বেআইনি সামগ্রীর আর্থিক মূল্য ছিল ১১১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। সারা দেশের মধ্যে স্থান ছিল অষ্টম। এবারে প্রথম অভিযান চালিয়ে আটক হয়েছে নগদ  ১৩ কোটি টাকারও বেশি টাকা।

প্রসঙ্গত, ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোট কেনা-বেচার খেলা বন্ধ রাখতে বরাবরই নির্বাচন কমিশন সতর্ক। এবার কমিশন নজরদারী আরও কড়া করেছে। রাজ্যের গত কয়েকটি ভোটে কলো টাকার লেনদেনই ভাবাচ্ছে কমিশনকে। নজরদারিতে চালু করেছে ‘ইলেকশান সিজার ম্যানেজমেন্টে’র নামে নয়া অ্যাপ। যার সাহায্যে কেউ ব্যাঙ্ক থেকে কেউ এক লক্ষ টাকার বেশি তুললেই কমিশন জেনে যাবে সেই ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য। ভোট পর্বে বেআইনি টাকা,মদ, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে কমিশনকে সাহায্য করেছে দশটি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি সংস্থা। এরা হল রাজ্য পুলিশ, আয়কর, রাজ্য আবগারি দফতর, সীমান্ত সুরক্ষা বল, আরপিএফ, ডিরেক্টরেট অফ ইন্টানিজেন্স (ডিআরআই),শুল্ক দফতর, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো, বন দফতর, স্টেট জিএসটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − twelve =