আসানসোলেই জলের তোড়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হল ৩ জনের। আসানসোলের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে এমনটা জানান রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। মৃত্যু হয়েছে চঞ্চল বিশ্বাস, রোহিত রায়, এবং ইসিএল কর্মী গৌরাঙ্গ রায়ের। এরইমধ্যে গাড়ুই নদীতে ভেসে যাওয়া চারচাকার খোঁজ মেলে শনিবার সকালে। সেই গাড়ির ভেতর থেকে উদ্ধার হয় চালক চঞ্চল বিশ্বাসের (৫৯) দেহ। প্রাক্তন সেনা কর্মী চঞ্চলবাবু বর্তমানে একটি সরকারি সংস্থায় কাজ করছিলেন বলে সূত্রে খবর। শনিবার সকালে কল্যাণপুর হাউজিং থেকে কিছুটা দূরে তাঁর গাড়িটি উদ্ধার করে এনডিআরএফ। এর পাশাপাশি আরও দু’টি ঘটনায় দু’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এর মধ্যে আসানসোল দক্ষিণ থানার রাহালেনের গৌরাঙ্গ রায় নামে এক খনি কর্মী রয়েছেন। অন্যজন রোহিত রায়। গৌরাঙ্গবাবুর বাড়ি আসানসোল উত্তর থানার রেলপারের ডিপোপাড়ার কেএস রোডে। সূত্রের খবর, শুক্রবার বৃষ্টি মাথায় নিয়েই বাইক নিয়ে কোলিয়ারিতে যাচ্ছিলেন গৌরাঙ্গবাবু। কালিপাহাড়ি রেল ব্রিজে ঘটে দুর্ঘটনা। জলের তোড়ে মোটরবাইক নিয়ে ভেসে যান তিনি। তারপর থেকেই চলছিল খোঁজ। শনিবার সকালে কালিপাহাড়ি রেল ব্রিজ থেকে অনেকটা দূরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
অন্যদিকে দুর্যোগের কবলে পড়েছিলেন কেএস রোডের রোহিত রায়ও। সুকান্ত পল্লিতে গাড়ুই নদীর উপরে একটি অস্থায়ী সেতু পার করে আসার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তখনই পা পিছলে নদীতে তলিয়ে যান তিনি। শনিবার ভোরে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের কাল্লা মোড়ের কাছে নদী থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
এদিকে খানাকুলের রায়বাড় এলাকায় শুক্রবার চোখের পলকে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মাটির দোতলা বাড়ি। ছোটাছুটি শুরু হতে না হতেই সব শেষ। সব মিশে গেল মাটিতে। তবে একটাই রক্ষা, হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। বাড়ি টলমল হতেই বাড়ির ভিতরে থাকা লোকজন ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাতেই বেঁচে যায় প্রাণ। পাশেই ছিল ইলেকট্রিকের পোল। ওই পোল থেকেই বাড়িতে এসেছিল ইলেকট্রিকের কানেকশন। সেই তারও ছিঁড়ে যায়। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় বড়সড় কোনও বিপদ ঘটেনি। কিন্তু, বাড়ির ভেতর থাকা আসবাবপত্র থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সবই চাপা পড়ে গিয়েছে ভেঙে পড়া দেওয়ালের তলায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, যেভাবে প্রবল বৃষ্টি চলছে গত দু’দিন ধরেই। তাতেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। নড়ে গিয়েছে বাড়ির ভিত। তার ফলেই ভেঙে পড়েছে আস্ত বাড়ি। এদিকে রাতারাতি মাথার ওপরে ছাদ হারিয়ে উদ্বেগে কোহিনুর বেগমের পরিবারের সদস্যরা। সরকারের কাছে করছেন সাহায্যের আবেদন। তবে কোহিনুর বেগমের কপালে ভাঁজ গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে তাঁর বাচ্চাদের নিয়ে। আশ্রয়হীন কোহিনুর কোথায় মাথা গুঁজবেন এখন সেটাই সবথেকে বড় প্রশ্ন। এই ঘটনায় কোহিনুরের আর্জি ‘বাড়িটা এখন সরকার করে দিলে খুব উপকৃত হব।’