সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও সরকারি কর্মচারিদের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৫ শিক্ষককে ডেকে পাঠাল বিধাননগর নর্থ থানা। বৃহস্পতিবার বিকাশ ভবনে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আগেই একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। সূত্রে খবর, বিধাননগর নর্থ থানা থেকে সোম ও মঙ্গলবার তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। হাজিরা না দিলে গ্রেফতারির হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। আর এখানেই চাকরিহারাদের আবার প্রশ্ন, মার খেল যাঁরা, তাঁদেরই আবার থানায় তলব?
এর পাশাপাশি এবার শিক্ষকদের আন্দোলনে কেন ছোটদের সামিল করা হয়েছে,তারও উত্তর চেয়ে পাঠাল রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন।
প্রসঙ্গত,বৃহস্পতিবার টানা অবস্থানের পর সাত দফা দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা। এরপর থেকে লাগাতার অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। শনিবার এই বিক্ষোভে শামিল হতে দেখা যায় বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের। শুধু তাই নয়, প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করে তারা। এরপরই ব্যাপারটা নজরে আসে শিশু সুরক্ষা কমিশনের। আন্দোলনে শিশুদের শামিল করা নিয়ে সরাসরি শিক্ষকদের কাছে নয় বরং পুলিশকেই নোটিস পাঠায় রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন তুলিকা দাস।
এ ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডল জানান,’সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কর্মীদের হুমকি দেওয়া জন্য তলব করা হয়েছে। ১৯ ও ২০ তারিখে ডেকে পাঠানো হয়েছে। যদি কেউ হাজিরা না দেন, তাহলে ৩৫(৬) এই ধারায় মামলা রুজু করা হবে। আমরা জানতে চাইছি, এইভাবে যে এফআইআর করা হচ্ছে, নতুন নতুন ধারায় মামলা করা হচ্ছে, আলাদা আলাদা করে ডাকা হচ্ছে, এটার কী কারণ? আমাদেরই লাঠি দিয়ে মারা হল, আমরাই রক্তাক্ত হলাম, আমরাই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি, আবার আমার বিরুদ্ধেই এফআইআর! চাকরিটা চলে গিয়েছে আমাদের, আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলাম, আমাদের হাতে কোনও লাঠি ছিল না, আমাদের হাতে কোনও অস্ত্র ছিল না, আবার আমাদেরকেই কেস দিয়ে ডেকে পাঠানো হচ্ছে!’ আর ছোটদের আন্দোলনে সামিল করার ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য়, একদল পড়ুয়াকে তাঁরা রাস্তায় বসে পড়িয়েছেন, আঁকা শিখিয়েছেন, গল্প বলেছেন ঠিকই, কিন্তু যারা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল করেছে তাদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিকে এই আন্দোলন নিয়ে শিশু সুরক্ষা কমিশনের জবাব তলব বিপদ আরও বাড়িয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে পুলিশকে এ ব্য়াপারে চিঠি পাঠানোয় ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না আন্দোলনকারীদের একাংশ।