৫৪ শতাংশ বাবা-মা জানাচ্ছেন সন্তানের প্রশ্নের তাৎক্ষণিক উত্তর তাঁদের কাছে নেই, বলছে Amazon Alexa-র সমীক্ষা

শিশুরা স্বভাবতই কৌতূহলী এবং বাবা-মায়েরা সর্বদা তাদের কৌতূহল মেটানোর জন্য নিখুঁত উত্তরের খোঁজ করেন, এমনটাই ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায়। যার বরাত দিয়েছিল Amazon Alexa। Kantar সংস্থার করা এই সমীক্ষা করা হয় ২০২৪-এর জুনে ৬টি শহরে। সেখানে ৭৫০+ বাবা-মায়ের মধ্যে এক সমীক্ষা করে জানা গেছে,  প্রায় ৫৪ শতাংশ বাবা-মায়ের প্রায়শই মনে হয়, সন্তানের প্রশ্নের তাৎক্ষণিক উত্তর তাঁদের কাছে নেই। এই সমীক্ষা আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ৫২ শতাংশ উত্তরদাতা সন্তানের প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে তৎক্ষণাৎ সার্চ করে জেনে নিয়ে সঠিক উত্তর দেন। মজার ব্যাপার হল, সার্ভেতে অংশগ্রহণকারী ৪৪ শতাংশ বাবা-মা এও স্বীকার করেছেন যে তাঁরা মুহূর্তে উত্তর বানিয়ে বলেন। আর মাত্র ৩ শতাংশ বাবা-মা প্রশ্নটি অগ্রাহ্য করেন অথবা বাচ্চা যাতে আর প্রশ্ন না করে তার জন্য কথা বলার বিষয় বদলে ফেলেন।

যেমন, ‘গাড়ি কী করে তৈরি হয়?’, ‘মহাবিশ্ব কত বড়?’, ‘প্লেন কী করে ওড়ে?’ আর ‘মাছ কী করে জলের তলায় নিশ্বাস নেয়?’ এমন কিছু  কৌতূহলোদ্দীপক প্রশ্ন শিশুরা করে থাকে। সার্ভেতে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৬০ শতাংশ বাবা-মা বলেছেন যে তাঁরা প্রায়ই বাচ্চাদের আপাত সহজ প্রশ্নে বোকা বনে যান, যেমন, ‘গ্রীষ্ম আর শীতের মধ্যে কোন ঋতু আসে?’, ‘বাবা-মাকে কাজ করতে হয় কেন?’ এবং ‘আমরা সবজি ধুয়ে খাই কেন?’ এ ব্যাপারে ৩৭ শতাংশ স্বীকার করেছেন যে তিনি সন্তানকে অন্যজনের কাছে প্রশ্ন করতে পাঠিয়ে দেন।

এই সমীক্ষায় বাচ্চাদের কৌতূহল কিসে জেগে ওঠে তা নিয়েও গবেষণা করেছে। তাতে ৬৩ শতাংশ বাবা-মা বলেছেন যে তাঁদের বাচ্চারা বেশি কৌতূহলী হয়ে ওঠে এবং প্রশ্ন করে টিভি দেখার সময়ে। বেড়ানো (৫৭ শতাংশ), পড়াশোনা করা (৫৬ শতাংশ), আউটডোর অ্যাক্টিভিটি (৫৫ শতাংশ), হাতে ধরা কোনো ডিভাইসে কনটেন্ট দেখা (৫২ শতাংশ) এবং বড়দের কথা শোনা (৫০ শতাংশ) আরও পাঁচটা এমন জিনিস যা শিশুদের মধ্যে কৌতূহল উস্কে দেয়। উপরন্তু খাবার, জীবজন্তু, প্রকৃতি, সাধারণ জ্ঞান, ছুটি, প্রযুক্তি এবং সিনেমা শিশুদের জিজ্ঞাসার প্রধান বিষয় হিসাবে উঠে এসেছে।

এই সার্ভে আরও বলছে যে ৮০ শতাংশেরও বেশি বাবা-মা প্রায়শই প্রযুক্তির ব্যবহার করেন এমন তথ্য খুঁজে বার করতে যা তাঁদের সন্তানদের প্রশ্নের জবাব দিতে সাহায্য করে। ভয়েস এআই পরিষেবার মত প্রযুক্তি, যেমন  Alexa (Echo স্মার্ট স্পিকারের মত ডিভাইসে যা পাওয়া যায়), ছেলেমেয়েদের বড় করার কাজে দারুণ সহায়তা করতে পারে কারণ এর সাহায্যে বাবা-মায়েরা সন্তানদের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে তাদের কৌতূহল তৎক্ষণাৎ মেটাতে পারেন। অতএব বাচ্চারা যখন কৌতূহলী হয়ে ওঠে তখন বাবা-মায়েরা Alexa-র সাহায্য নিয়ে বিজ্ঞান থেকে শুরু করে ইতিহাস এবং আরও অনেক বিষয়ে যে কোনো পরিমাণ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।

দিলীপ আর এস, কান্ট্রি ম্যানেজার ফর Alexa,Amazon ইন্ডিয়া এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘স্বতঃস্ফূর্ত প্রশ্ন করা থেকে শুরু করে জ্ঞানভিত্তিক প্রশ্ন বা ওদের বয়সের পক্ষে অসাধারণ প্রশ্ন করা, বাচ্চারা স্বভাবতই কৌতূহলী হয় এবং সবসময় তাদের চারপাশের জগৎটা সম্পর্কে উত্তর খুঁজতে থাকে। বাবা-মায়েদের এমন উত্তর দেওয়া জরুরি যা তথ্যনিষ্ঠ, সহজবোধ্য, গঠনমূলক এবং বাচ্চার বয়সের উপযোগী। এখন সারা পৃথিবীতে ছোট ছোট বাচ্চারা প্রতি মাসে Alexa-কে ২৫ মিলিয়ন প্রশ্ন করে। এটা প্রমাণ করে যে Alexa বাবা-মায়েদের জন্য তথ্য ও শিক্ষার হাব হয়ে উঠেছে। আমরা অ্যালেক্সায় প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ভরে দিয়ে এমন করে তোলার উপরে জোর দিচ্ছি যাতে বাচ্চারা প্রতিদিন নতুন জিনিস শিখতে পারে, আবার মজাও পায়।’ এদিকে ৯০ শতাংশেরও বেশি বাবা-মা এ ব্যাপারে একমত যে তাঁরা বাচ্চাদের অনবরত বেড়ে উঠতে এবং নতুন নতুন জিনিস সম্পর্কে জানতে সাহায্য করার জন্য তাদের আরও বেশি প্রশ্ন করতে উৎসাহ দেন। প্রায় ৯২ শতাংশ বাবা-মা একমত যে বাচ্চাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তাঁরাও নতুন জিনিস শেখেন।

দীপেন্দর রানা, এক্সিকিউটিভ ম্যানেজিং ডিরেক্টর – সাউথ এশিয়া, ইনসাইটস ডিভিশন, Kantar জানান, ‘আজকালকার বাচ্চারা আগের চেয়ে অনেক বেশি কৌতূহলী আর বাবা-মায়েরা সবসময় আপ্রাণ চেষ্টা করেন তাদের কৌতূহল মেটাতে। যদিও টিভি দেখা বাচ্চাদের কৌতূহল জাগিয়ে তোলে এবং প্রায়ই তারা যা দেখছে আর শুনছে তা নিয়ে বেশি প্রশ্ন করে, সার্ভেতে অংশ নেওয়ার বেশিরভাগ বাবা-মা ছেলেমেয়ের স্ক্রিনবিহীন শিক্ষাই পছন্দ করেন। এই কারণেই বাবা-মায়েদের দ্বারা বা তাঁদের উপস্থিতিতে ভয়েস-ফার্স্ট সার্চ উত্তর খুঁজতে এবং দুনিয়া সম্পর্কে জানতে এক দারুণ স্ক্রিনবিহীন সমাধান হয়ে ওঠে।’

প্রসঙ্গত, Alexa-য় Echo Pop আর Echo Dot স্মার্ট স্পিকারের মত বাচ্চাদের জন্য বহু ভয়েস-ফার্স্ট উপভোগ্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে বাবা-মায়েরা সন্তানদের কৌতূহল দ্বারা চালিত কনটেন্ট দিয়ে ব্যস্ত রাখতে পারেন বিশ্বাস ও সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়েই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =