আচমকাই ঊর্ধ্বমুখী পেঁয়াজের দর। আচমকাই নবীন থেকে প্রবীণ হয়েছে সে। কারণ, বেশিরভাগ বাজারে পেঁয়াজ এখন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সমস্যা হল, পেঁয়াজ হিমঘরে সংরক্ষণ করা যায় না। বিশেষ পদ্ধতিতে ঝুলন্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করতে হয়। কৃষি দফতরের এক কর্তা জানান, এ জন্য গত ২ বছরে রাজ্য ৫৭০টি গোলা তৈরি করেছে। এ রকম এক-একটি গোলাতে ২৫ টন করে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায়। বর্তমানে সুফল বাংলা স্টলগুলিতে এই পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ভিন্ রাজ্যের উপরে নির্ভরশীলতা কমানোর। সেই লক্ষ্যে পেঁয়াজ চাষে জমি এক লপ্তে অনেকটা বাড়ানোর পাশাপাশি তা সংরক্ষণের জন্যও প্রায় এক হাজার গোলা তৈরি করা হচ্ছে। সে জন্য ৬ কোটি টাকা ইতিমধ্যে বরাদ্দ হয়েছে। কৃষি দফতরের আশা, আগামী বছর পেঁয়াজের দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। হর্টিকালচার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পেঁয়াজের উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য ৬টি জেলার ৭ হাজার বিঘা জমিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই জমিতে অর্থকরী ফসল হিসেবে আগামী খরিফ মরশুম থেকে শুরু হয়ে যাবে পেঁয়াজের চাষ। এখন রাজ্যে সব থেকে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয় মুর্শিদাবাদ জেলায়। এর বাইরে পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, মালদা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলাতেও পেঁয়াজ চাষের জমি বাড়ানো হচ্ছে। এই জেলাগুলির বাইরে দুই ২৪ পরগনাতেও পেঁয়াজের চাষ বাড়ানো হবে। সব মিলিয়ে এতদিন পর্যন্ত যত জমিতে পেঁয়াজ চাষ হতো, এ বছর অতিরিক্ত ৭ হাজার একর জমিতে মূলত সুখসাগর জাতের পেঁয়াজ চাষ হবে।
তবে স্বস্তির খবর এর মধ্যেও আছে। খোলা বাজারে পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও সুফল বাংলায় তার দাম ৩৯ টাকা। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে বর্তমানে বছরে প্রায় ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাতে প্রায় ৮ লক্ষ মেট্রিক টন সুখসাগর প্রজাতির পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। চাহিদার বাকি পেঁয়াজ নাসিক, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আমদানি করা হয়।