পড়াশুনার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ঋণের আবেদন করেছিলেন হাওড়ার মিখাইল। একজন চিকিৎসক হিসাবে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। মানব সেবার লক্ষ্য নিয়েই জীবনে ডাক্তার হতে চেয়েছিলেন হাওড়ার আমতার এই বাসিন্দা। কিন্তু ঋণের টাকা না মেলায় পড়াশুনার শেষ পথে নিজের স্বপ্নভঙ্গ হতে চলেছে তাঁর।
জানা গিয়েছে ২০১৯ সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য ইউক্রেনে পাড়ি দিয়েছিলেন মিখাইল আলম। যদিও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০২২ সালে মাঝপথে তাঁকে দেশে ফিরে আসতে হয়। সেই সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় দেশে ফেরা পড়ুয়াদের পাশে দড়িয়ে রাজ্যেই তাঁদের পড়াশুনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এমনকী পড়াশুনায় সাহায্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডে ঋণ প্রদানের আশ্বাসও দেওয়া হয়। এরপরই মিখাইল স্টুডেন্ট ক্রেটিড কার্ডের মাধ্যমে ৮ লাখ টাকা ঋণ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। বিকাশ ভবন থেকে অনুমোদনও দেওয়া হয়েছিল। সেইমত সকলের মতো আশায় বুক বেঁধেছিলেন মিখাইলও। ঋনের আবেদন জানানোর পর ২০২২ সালের শেষের দিকে পুনরায় ইউক্রেনে ফিরে যান তিনি। এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কে এসে তাঁর সেই ঋণ আটকে যায়। মিখাইলের বাবা নাসিরউদ্দিন জানান ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল ব্যাঙ্কে গিয়ে ছেলে স্বাক্ষর করলে তবেই ঋণের টাকা মিলবে। সেইমত ছেলেকে খবর পাঠিয়ে দু’মাসের জন্য দেশে আনিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্কের গড়িমাসির জন্য এখনও পর্যন্ত ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ইউক্রেনে নিজের পড়াশোনাও শেষ করতে পারছে না মিখাইল। নাসিরউদ্দিন আরও জানান, তাঁর ছেলে অনলাইনে পড়াশোনা করলেও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করতে না পারায় আদতে ক্ষতি হচ্ছে। এই বিষয়ে আমতা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও জানান, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ওই ছাত্র যাতে ঋণ পেয়ে যান সেই বিষয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা হয়েছিল। এতদিনে তাঁর ঋণ পেয়ে যাওয়ার কথা। তবে কেন এখনও পর্যন্ত ঋণ পায়নি সেই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা গিয়েছে রাজ্য সরকারকে। তারই অন্যতম এই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড। এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ঋণ দেওয়া হয়। তারপরেও কেন এমন হল, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্নমহলে।