৮ দিনে্র পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ শিবুর

৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। সন্দেশখালির ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে উঠে এসেছে শিবু হাজরার নাম। শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এই নেতার বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ সামনে এনেছেন সন্দেশখখালির মহিলারা। অভিযোগে তাঁরা জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে দলীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হত। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, শিবু হাজরার হাত যে পুলিশের থেকেও লম্বা। এরপর সন্দেশখালি-২ ব্লকের সভাপতি শিবু হাজরার নাম জড়ায় যৌন নির্যাতনের ঘটনায়। আদালতের নির্দেশে শিবুর বিরুদ্ধে মামলায় শনিবার দু’টি ধারা যোগ করে পুলিশ। একটি গণধর্ষণের ধারা, আর একটি গণধর্ষণের চেষ্টার ধারা। শিবুর বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় গণধর্ষণের ধারা যোগ হওয়ার পর  শনিবার রাতে ধরা পড়ে। এরপর রবিবার সকালে তাঁকে পেশ করা হয় বসিরহাট মহকুমা আদালতে। তবে জামিনের আর্জি জানানোর পাশাপাশি নিজের পক্ষে আদালতে একাধিক সাফাই দেন শিবু। এদিকে পুলিশের তরফ থেকে এদিন আদালতে রিমান্ড প্রেয়ারের আবেদন জানানো হয়। সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন শিবু। সেই সময়েই পুলিশের জালে পড়ে যান তিনি। শাসনের দক্ষিণ শিকারি ঘেরি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। পুলিশের সেই নথিতে ‘প্রভাবশালী ব্যক্তি’ হিসেব উল্লেখ করা হয়েছে শিবুকে। পুলিশ সেখানে বলেছে, জামিন পেলে এলাকায় শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে, তদন্তও প্রভাবিত হতে পারে। এই যুক্তিতেই পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। শিবু হাজরার পুলিশি হেফাজতের আর্জি জানান। তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘এই কেসে আরও অনেকে থাকতে পারে, সেটা জানার দরকার আছে। তদন্তের জন্য অনকে কিছু বাজেয়াপ্ত করার প্রয়োজনীয়তা আছে। তাই ১০ দিনের হেফাজত চাই।’

শিবুর আইনজীবী বিচারককে বলেন, ‘আসামির ঠিকানাটা দেখুন স্যর।’ লেখা আছে ‘শিবু হাজরা, ঠিকানা জেলিয়াখালি।’ আইনজীবী উল্লেখ করেন, শিবুর বিরুদ্ধে যে মহিলা অভিযোগ জানিয়েছেন, তিনি সন্দেশখালির বাসিন্দা। তাঁর দাবি, যেখানে ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ, সেখানে যেতে গেলে জেলিয়াখালি থেকে দুটো নদী পার করতে হয়, বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। আইনজীবী বলেন, ‘অভিযোগকারিনী অভিযুক্তকে কতটা চেনেন, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। এটা একটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। সাজানো ঘটনা। গ্রেফতারির ক্ষেত্রেও যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি। অবৈধভাবে তদন্ত হচ্ছে।’ তবে এদিন দু পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে রায়দান স্থগিত রাখা হয়।

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, শিবু হাজরার আইনজীবী উল্লেখ করেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম এফআইআর দায়ের হয়। ১৫ তারিখে ১৬৪ হয় (গোপন জবানবন্দি)। তাঁর দাবি, এফআইআরে যা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে গোপন জবানবন্দির অনেক তফাৎ। জনবহুল এলাকায় ভরদুপুরে কীভাবে গণধর্ষণ সম্ভব, সেই প্রশ্নও তুলতে দেখা যায় শিবুর আইনজীবীকে। মেডিক্যাল রিপোর্ট কোথায়, জানতে চেয়েছেন তিনি। যে কোনও শর্তে জামিনের আর্জি জানানো হয় শিবুর তরফে। এদিকে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন শিবু। তবে কোনও অভিযোগের কথা, তা উল্লেখ করেনি পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এ, ৩৫৪ বি, ৩৭৬ ডি, ৩০৭, ৩৪১, ৩২৩, ৫০৬, ৫০৯ ও ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়েছে শিবুর বিরুদ্ধে। বাকি মামলাগুলি আগেই হয়েছিল। পরে এক মহিলার গোপন জবানবন্দি নেওয়ার পর শনিবার মামলায় যুক্ত হয় ৩৭৬ ডি (গণধর্ষণ) ও ৩০৭ (খুনের চেষ্টা) ধারা।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − three =