অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল-নার্সিংহোম আছে যাদের নামের মধ্যে ব্য়বহার করা হয়েছে ‘রিসার্চ’ শব্দটি। স্বাস্থ্য মহলের একাংশ মনে করে, অনুদান প্রাপ্তি ও কর ছাড়-সহ কিছু আর্থিক সুবিধার পাশাপাশি আমজনতার কাছে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার উদ্দেশ্যেই বহু বেসরকারি হাসপাতাল তাদের নামের সঙ্গে রিসার্চ বা গবেষণা কথাটি জুড়ে দেয়।
এদিকে এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরের ধারনা, এর মধ্যে একটা বড় অংশের হাসপাতালেই গবেষণা সংক্রান্ত কোনও কাজ হয় না। এবার সেই কারণেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হল, নামের সঙ্গে রিসার্চ যুক্ত থাকলে নিয়মিত গবেষণার প্রমাণ দাখিল করতে হবে স্বাস্থ্যভবনে। অন্যথায় বাতিল হতে পারে লাইসেন্স। বন্ধ হতে পারে ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট লাইসেন্সের নবীকরণ। এদিকে সম্প্রতি যে সার্কুলার জারি করেছে স্বাস্থ্যভবন, তাতে দ্বর্থ্যহীন ভাষায় বলা হয়েছে, বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের নামের মধ্যে রিসার্চ শব্দটি থাকলে নিয়মিত ভাবে তাদের গবেষণার প্রমাণস্বরূপ নানা নথি দেখাতে হবে স্বাস্থ্য দফতরকে। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা অনিরুদ্ধ নিয়োগী জানান, ‘অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতাল রিসার্চ শব্দটি তাদের নামে ব্যবহার করে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি সংক্রান্ত সামাজিক প্রতিষ্ঠা পেতে। এবার থেকে কতগুলো গবেষণার কাজ হলো, কতগুলি দেশি-বিদেশি জার্নালে গবেষণাপত্রের আকারে প্রকাশিত হলো, সে সব তথ্য দু’ বছর অন্তর সরকারকে নিয়মিত জানাতে বাধ্য থাকবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল।’
এদিকে স্বাস্থ্যভবনের ক্লিনিক্যাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট শাখার তথ্য বলছে, শুধু কলকাতা পুর এলাকাতেই অন্তত ২০টি হাসপাতাল রয়েছে যাদের নামের মধ্যে রয়েছে রিসার্চ শব্দটি। জেলাস্তরে সংখ্যাটি আরও বেশি। ২৭টি স্বাস্থ্যজেলায় সংখ্যাটি শতাধিক। আর এখানেই স্বাস্থ্য দফতরের সন্দেহ, মাঝারি ও ছোট মাপের রিসার্চ সেন্টার’ প্রতিষ্ঠানগুলিতেই গবেষণার নামে চোখে ধুলো দেওয়া হয়।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা ও জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতাল গোষ্ঠীর অধিকর্তা শ্বেতা শর্মা বলেন, ‘জমি কেনা, নির্মাণ, পুর কর ও আয়কর ছাড়, সুনাম ও ভাবমূর্তির মতো নানা সুবিধা মেলে। যেখানে মানবকল্যাণের জন্য গবেষণার কাজ করা হচ্ছে, বা করা হচ্ছে বলে দেখানো হচ্ছে, সেখানে সুবিধা তো মেলেই। প্রতিটি গবেষণার ব্যাপারে সরকার তাই জানতে চাইতেই পারে।’