বেসরকারির বাস মালিকদের দাবি পূরণ না হওয়ায় এবার তাঁরা বেসরকারি বাস পরিষেবা প্রত্যাহারের পথে হাঁটলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরেই এই সিদ্ধান্ত নেন বেসরকারি বাস মালিকেরা। একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, মার্চে পর পর তিনদিন বাস ধর্মঘটের পথে যাচ্ছেন তাঁরা। মূলত ১৫ বছরের পুরনো বাস বাতিলের প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয় বেসরকারি পাঁচটি বাস সংগঠনের তরফ থেকে। কারণ, শহর ও শহরতলিতে দূষণ কমাতে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনালের তরফে ১৫ বছরের পুরনো গাড়ির বাতিলের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে এক বিপু সংখ্যাক বেসরকারি বাসের বয়স ১৫ বছর হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বাতিল হবে একটা বড় অংশের বেসরকারি বাস। তা আটকাতেই পথে নেমেছেন পরিবহণ মালিকরা।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে বৃহস্পতিবার পরিবণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর র সঙ্গে দেখা করেন পাঁচটি সংগঠনের কর্তারা। পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে ডেপুটেশনও দেন তাঁরা। যে পাঁচটি বেসরকারি বাস সংগঠনের তরফ থেকে এদিন সদস্যরা পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তারা হল জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট, বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেট, ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি আর ইন্টার ইনট্রা রিজিয়ন বাস অ্যাসোসিয়েশন। এদিন যে দাবি সনদ তাঁরা পরিবহণ মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন তাতে মূলত ১৫ বছরের বেসরকারি বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে সময়সীমা বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়। এই প্রসঙ্গেই তাঁরা সামনে এনেছেন করোনা কালের কথাও। কারণ, এই সময়ে পথে সে ভাবে বাস বের করা হয়নি। ফলে স্বাভাবিক ভাবে কোনও একটি যানের ক্ষেত্রে ১৫ বছরের যে আয়ু ধরা হয় তাতে এখনও বেহাল হয়ে পড়েনি এই বাসগুলো। পাশাপাশি তাঁরা এও জানাচ্ছেন, এই করোনা কালে বেসরকারি বাস সংগঠনগুলোর ব্যবসা বলতে কিছুই হয়নি। ফলে বেশ কিছুটা আর্থিক লোকসানের পথেই হেঁটেছে বঙ্গের বেসরকারি বাস ব্যবসা। তারই জেরে এই মুহূর্তে নতুন কোনও বাস পথে নামানোর জন্য যে আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকা দরকার তা নেই এই বাস মালিকদের। বাস মালিকদের এই আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা ভেবেও বাস বাতিলের এই সময়সীমা বৃদ্ধি করা উচিত বলে মনে করছেন বেসরকারি বাস সংগঠনের মালিকেরা। সঙ্গে তাঁরা এও জানিয়েছেন, এই আর্থিক প্রতিকূল অবস্থা থেকে বাঁচার জন্য তাঁদের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তার আর্জি জানানো হয়েছিল। সেখানে আর্থিক সহায়তা তো ‘দূর-অস্ত’, এমনকী ব্যাঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রেও বিশেষ কোনও সহায়তার রাস্তা দেখানো হয়নি দুই সরকারের তরফ থেকেই।