ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ, ঢাকার একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বেইলি রোডের এক সাত তলা ভবনে আগুন লাগে। ১৩টি ইঞ্জিনের রাতভর প্রচেষ্টায় সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও এই ঘটনায় কমপক্ষে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ২২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মহিলা ও শিশু রয়েছেন। বহুতলটির ভিতর থেকে মোট ৭৫ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।তবে আহতদের অনেকেরই আগুনে পুড়ে গিয়েছেন এবং ধোঁয়ার জেরে শ্বাসযন্ত্রের গুরুতর ক্ষতিও হয়েছে অনেকেরই। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার ভোরে, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, আহতদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দমকল কর্তারা জানিয়েছেন, ভবনটির প্রথম তলায় অবস্থিত এক রেস্তোরাঁয় প্রথমে আগুন লেগেছিল। সেখান থেকে আগুন দ্রুত উপরের তলগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। উপরে আরও কয়েকটি রেস্তোরাঁ এবং একটি পোশাকের দোকান ছিল। ফলে কিছুক্ষণের মধ্যেই এই সাততলা ভবনটি চলে যায় আগুনের গ্রাসে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম ও দ্বিতলে আগুন লাগে। আগুন ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে আটকে পড়েন অনেকে। আগুন এবং ধোঁয়ার হাত থেকে বাঁচতে অনেকে ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। পরে, মই ব্যবহার করে দমকল কর্মীরা তাদের অনেককে উদ্ধার করেন। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, ওই বাড়িতে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ থাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণেই আগুন তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এর ফলে আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন।
এদিকে কী কারণে আগুন লেগেছে তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, শর্টসার্কিট বা গ্যাস লিক করে আগুন লেগে থাকতে পারে। ঘটনাস্থল থেকে সূত্র সংগ্রহ করে গবেষণাগারে কেমিকেল টেস্ট করলে, তবেই, আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে রাতেই মৃতদের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর, ভোর দুটো নাগাদ নিহতদের স্বজনদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মৃতদেহ শনাক্তকরণের কাজ শুরু হয়। এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের দেহ শনাক্ত করা গিয়েছে। শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে দেহগুলি হস্তান্তর করা শুরু হয়।