নির্বাচন কমিশনের সর্বদলীয় বৈঠকে একদফায় নির্বাচন করার আর্জি তৃণমূলের

রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করল নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। আধা সেনার ভূমিকা নিয়ে এদিনের এই বৈঠকে অভিযোগ জানাতে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে।  পালটা, শেখ শাহজাহানের প্রসঙ্গ টেনে রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয় সিপিএম এবং বিজেপি উভয় শিবিরই।

সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে শাসক দলের তরফে রাজ্যে একদফায় ভোট করানোর জন্য আবেদন করা হয়। এছাড়াও তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের দাবি, ভোট দেওয়ার জন্য গ্রহণযোগ্য এগারোটি আইডি কার্ডের গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি, প্রশ্ন তোলা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও।  এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফ থেকে জানানো হয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর বিজেপি যাতে প্রভাব খাটাতে না পারে সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে হবে।

এদিকে এদিন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ওপরেও কড়া নজর রাখার ব্যাপারে আর্জি জানানো হয়। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করবে‌‌ সেদিকেও নজর রাখতে হবে। তৃণমূলের প্রতিনিধি দলের সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আমরা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করানোর জন্য আবেদন করেছি। নির্বাচন কমিশন যা ব্যবস্থা নেবে, তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যেন বিজেপি নিয়ন্ত্রিত না করে।

অন্যদিকে এদিনের এই বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের কাছে নালিশ করতে দেখা যায় বিজেপিকে। বিজেপি দলের প্রতিনিধি জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে জনগণ হিংসা দেখেছে সারা রাজ্য জুড়ে। শেখ শাহজাহাননের ঘটনা প্রমাণ করে, অপরাধীদের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন করতে এসে পর্যবেক্ষকরা যেন রাজ্য পুলিশের কথায় বিশ্বাস না করে।’ অন্যদিকে, সিপিএমের তরফে ভুয়ো ভোটার তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। কমিশনকে সিপিএমের প্রতিনিধি দল জানান, অনেকগুলি পঞ্চায়েত ভোট গ্রহণ অবাধ হয়নি। ভোট লুঠ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রশাসনের যে আধিকারিকরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না বলেও দাবি জানান তাঁরা।

প্রসঙ্গত, সোমবার সকাল সাড়ে নটা থেকে রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা। এদিনই রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গেও বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। ভোট ঘোষণা হয়ে গেলে রাজনৈতিক দলগুলোর কী কী করণীয়, প্রচারের সময় কোন কোন কাজ করা যাবে না, সেই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়ে দেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের নির্দেশ না পালন করলে কী পদক্ষেপ করবে নির্বাচন কমিশন সে ব্যাপারেও নির্দেশিকা দেওয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − 6 =