দীর্ঘ সময় ভারতে লুকিয়ে থাকার পরে ভারতীয় পাসপোর্ট হাসিল করে জাল ভিসার মাধ্যমে রাশিয়ায় পাড়ি দিয়ে সেখান থেকে ভারতে ডিপোর্টেড হলেন দু’জন রোহিঙ্গা৷ আর এই ঘটনাই এখন মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা দফতরের সামনে। কারণ সন্দেহ দেখা দিয়েছে, কলকাতা থেকে জাল ভারতীয় নথি জমা দিয়ে পাসপোর্ট জোগাড় করে কি তা পৌঁছে যাচ্ছে মায়ানমার-বাংলাদেশ রুটে। আর এই ঘটনায় সামনে এসেছে বাংলার যোগও৷ এদিকে সূত্রে খবর, কলকাতার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকেই মিয়ানমারের নাগরিক দুই রোহিঙ্গা ভারতীয় পাসপোর্ট যোগাড় করেছিল। তার আগে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে পালিয়ে এসে ওই দু’জন উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ, হাবড়া, বসিরহাট, দত্তপুকুর এলাকায় ছ’মাসের বেশি সময় ধরে লুকিয়ে থেকে ভারতীয় আধার ও ভোটার কার্ডও জোগাড় করে ফেলেন৷
সঙ্গে এ খবরও মিলেছে, মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে সেখানকার একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন ওই রোহিঙ্গা যুবক-যুবতী৷ ওই শিবিরে মাস ছয়েক খানেক কাটানোর পরে সেখান থেকে এক দালাল মারফত ত্রিপুরায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত টপকে ভারতে ঢোকেন দু’জন৷ আগরতলা সংলগ্ন এলাকায় কয়েক মাস থাকার পরে তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেন দালাল মারফত। প্রথমে বনগাঁ সংলগ্ন একটি গ্রাম এবং পরে হাবরা, বসিরহাট ও দত্তপুকুর এলাকায় ছ’মাসের বেশি সময় ধরে লুকিয়ে ছিলেন তাঁরা। আর এই সময়ের মধ্যেই তাঁরা ভারতের রেশন, আধার ও ভোটার কার্ড জোগাড়ও করে ফেলেন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, সেই নথি ব্যবহার করে দালালের সূত্র ধরে কলকাতার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে নাম বদলে ভারতীয় পাসপোর্টও জোগাড় করেন তাঁরা। এরপর দিল্লি গিয়ে ওই যুবক-যুবতী কিছুদিন থেকে জাল রুশ ভিসার ব্যবস্থা করে ফেলেন। এরপর মস্কো বিমানবন্দরে নামার পরে সেখানকার ফেডারেল মাইগ্রেশন সার্ভিস অফিসারদের হাতে আটক হন দু’জন। সেখানেই ভেরিফিকেশন পর্বে দেখা যায়, তাঁদের হাতে থাকা রুশ ভিসা জাল। এরপরই দু’জনকে ভারতে ডিপোর্ট করার সিদ্ধান্ত নেন মস্কো বিমানবন্দরের অভিবাসন বিভাগের আধিকারিকরা। তাঁরা দিল্লিতে নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আটক করে বিমানবন্দর থানার পুলিশ। দিল্লি আইজিআই এয়ারপোর্টের ডিসিপি ঊষা রঙ্গনানি জানান, রাশিয়া থেকে ভারতে ডিপোর্টেড হওয়া দু’জনের পাসপোর্টে নাম রয়েছে শুভজিত্ দাস ও ববিতা রায়। এরপরই তাঁদের জেরা করে জানা যায় রোহিঙ্গা পরিচয়। বিষয়টি জানানো হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদেরও।