সল্টলেকে বিজেপি কার্যালয়ে বুধবারই বিজেপিতে যোগ দিলেন তাপস রায়। তিনবারের বরানগরের বিধায়ক ছিলেন তিনি। এদিন তাঁর যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ বঙ্গ বিজেপির আরও অনেককেই। তৃণমূলের সঙ্গে ২৩-২৪ বছরের সম্পর্ক তাপসের। সোমবার দীর্ঘ এই রাজনৈতিক যোগ ছিন্ন করেন তাপস। তৃণমূলের সদস্যপদ ছাড়ার পাশাপাশি ছাড়েন বিধায়ক পদও। তৃণমূল সবরকমভাবে তাপসকে আটকাতে মরিয়া ছিল। তবে সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তাপস। এদিকে বিধানসভা সূত্রে খবর, এখনও বিধায়ক হিসাবে তাঁর ইস্তফাপত্রও গৃহীত হয়নি।
এদিন বিজেপিতে যোগ দিয়ে তাপস রায় জানান, ‘আমি আজ থেকে বিজেপি পরিবারের এবং মোদিজীর পরিবারের সদস্য হলাম। বাংলায় অরাজকতা চলছে। এই সরকার শেখ শাহজাহানদের সরকার, উত্তম সর্দারদের সরকার, শিবু হাজরাদের সরকার। এই সরকার সংবিধান আইনকানুনের কথা বলে অথচ হাইকোর্টের নির্দেশ মানে না। বাংলা থেকে এই অমানবিক জলদস্যুদের সরিয়ে সকলে মিলে যাতে শান্তির বাংলা গড়তে পারি, তাই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’
এরই পাশাপাশি বিজেপিতে যোগ দিয়েই শুভেন্দু অধিকারী ও অধিকারী পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করে দিতে দেখা যায় বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তাপস রায়কে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘অধিকারীদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বহু বছরের। একটা সময় এই পরিবারে যাতায়াত ছিল। থেকেছি, খেয়েছি, ছাত্র-যুব আন্দোলন করেছি। দীর্ঘ বছরের সম্পর্ক। একটু আগেই দিব্যেন্দুর ফোন এসেছিল।’
এদিকে তাপস রায়ের প্রশংসাও শোনা যায় শুভেন্দু-সুকান্তদের গলায়। নতুন সদস্যকে দলে পেয়ে শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের দল চায়। তাপস রায় অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। অন্যদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা মঙ্গল পাণ্ডে জানান, বাংলায় বিজেপির হাত শক্ত হচ্ছে। সুকান্ত মজুমদারও বলেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন তাপস রায়।
এদিকে বিধানসভা সূত্রে খবর, পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় এখনই গৃহীত হল না বিধায়ক পদে তাপস রায়ের ইস্তফাপত্র। এই প্রসঙ্গে বিধানসভার স্পিকার জানিয়েছেন, ‘পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। সেই কারণে পদ্ধতিগত সংশোধন করে তিনি নতুন করে ইস্তফাপত্র দেবেন বলে জানিয়েছেন। যদি তিনি সেটা দেন, তখন আমি সেটা বিবেচনা করে দেখব।’ সঙ্গে বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় তাপস রায়কে বিধানসভায় আসতে বলা হয়েছে বলেও জানান স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, গত সোমবার তাপস রায় বিধানসভায় এসে তাঁর ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন স্পিকারের অফিসে। গতকালই সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, তাপস রায়ের ইস্তফা পত্র নিয়ে সন্তুষ্ট নন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই আজ বিকেল ৩ টে নাগাদ তাপস রায়কে ডেকে পাঠানো হয়েছে বিধানসভায়। যদিও অপর একটি সূত্র বলছিল, তাপস রায়ের ইস্তফাপত্র পরীক্ষার কাজ শেষ না হওয়ার কারণে, মঙ্গলবারের পরিবর্তে তাঁকে বুধবার বিধানসভায় আসতে বলা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে তাপস রায়ও এদিন বলেন, ‘একটি ফরম্যাট আছে তো। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় এসে গোটা বিষয়টি হয়ে যাবে। পদ্ধতিগত কারণে কাল আসতে হবে। স্পিকার বিশিষ্ট আইনজীবী। আমিও নিয়ম মেনে চলা মানুষ, অনৈতিক কিছু করিনি, করবও না।’একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘গ্রহণ হোক বা না হোক, আমি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছি। যে যে পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি সেগুলো ফেরানোর কোনও প্রশ্ন নেই।’