রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নিজস্ব বাহিনী হিসেবে পরিচিত ভাড়াটে সেনা ‘ওয়াগনার গ্রুপ’ বিদ্রোহী হতেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে ‘গৃহযুদ্ধ’-র খবর। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বদলায় পরিস্থিতি। সমঝোতায় রাজি হন ওয়াগনার প্রধান অলিগার্চ ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। এরপর রাশিয়া ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে রওনা হন তিনি। তবে বেশ কিছু শর্তে রাজি হওয়ার পরই করেছেন সমঝোতা এমনটাই সূত্রে খবর। আর এই সমঝোতার শর্ত সম্পর্কে যে খবর মিলছে তাতে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহারে শর্ত দিয়েছেন ওয়াগনার প্রধান। সেই শর্ত মেনেই ওই চুক্তি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে গত ১৬ মাস ধরে রুশ সেনার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে ওয়াগনার গ্রুপ। কিন্তু গত শনিবার আচমকাই বিদ্রোহী হয় রাশিয়ার এই ভাড়াটে সেনার দল। দেশের দক্ষিণ অংশের রোস্তভ-অন-দন শহর দখল করে প্রিগোজিন। সেখানকার সেনা সদরও দখল করেন তিনি। শুধু তাই নয়, সেখান থেকে ওয়াগনার বাহিনী ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রওনা দেয় রাজধানী মস্কোর দিকে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিরুদ্ধে একরকম যুদ্ধই ঘোষণা করেন ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন। কেউ বাধা দিতে এলে তাঁকে গুঁড়িয়ে দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। একথা শুনেই চটে যান রুশ প্রসিডেন্ট পুতিন। ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রিগোজিনকে বিশ্বাসঘাতক বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পিছন থেকে রাশিয়াকে ছুরি মারা অভিযোগ তোলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
এই পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট। প্রিগোজিনকে সমঝোতার জন্য তিনিই রাজি করান। এর পরই বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরতে বলেন ওয়াগনার প্রধান। মস্কোর ২০০ কিলোমিটার দূরে থেকে ফিরে যায় ভাড়াটে ফৌজ। এদিকে সূত্রের খবর, সমঝোতার শর্ত হিসেবে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গেও আলাদা করে চুক্তি করবেন প্রিগোজিন। সেখানে বিদ্রোহী ওয়াগনার সদস্যদের সাজা না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে মস্কো। উলটে ইউক্রেন যুদ্ধে এই বাহিনীর সাহসিকতার প্রশংসা করা হবে বলেও খবর মিলেছে।
শনিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন বরাবরই ওয়াগনার যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। সেই শ্রদ্ধা এখনও অটুট রয়েছে। চুক্তির পর ফের ওয়াগনার যোদ্ধাদের রণাঙ্গনে পাঠানো হবে কিনা, তা অবশ্য জানা যায়নি।