পাতা ভরা বিজ্ঞাপন দিয়েছিল বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার কত খরচা করেছে শেষ পাঁচ বছর তারই একটা খতিয়ান তুলে ধরা হয় বিজ্ঞাপনে। এই বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করেই এবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসকে। কমিশনের কাছে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে, এটা ভোটের আগে এক স্পষ্ট আচরণবিধির লঙ্ঘন। কারণ, নিয়মানুসারে সরকারি বিজ্ঞাপনগুলি ‘রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা’ বজায় রাখা এবং ক্ষমতায় থাকা দলের ইতিবাচক ধারণা বা সরকারের সমালোচনাকারী দলগুলির একটি নেতিবাচক ধারণা প্রকাশ করা থেকে এড়িয়ে যাওয়া। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, ‘আমরা মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের কাছে চিঠি লিখেছি যে, উল্লিখিত প্রকাশনাগুলি প্রত্যাহার করতে এবং ভবিষ্যতে অনুরূপ প্রকাশনাগুলি যাতে এ ব্যাপারে সচেতন থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য তাঁর হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছি।’
প্রসঙ্গত, এই বিজ্ঞাপনটি নিয়েই বৃহস্পতিবারই প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিজ্ঞাপনে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে বলে সরব হন তিনি। এরপরেই তিনি ঘোষণা করেন, কেন্দ্রীয় সরকার আর্থিক বঞ্চনা নিয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে গত দুই অর্থবর্ষে ‘এক পয়সাও’ দেওয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়। এই দাবি তিনি করেছেন গত রবিবারের ব্রিগেডের মঞ্চের থেকেও। আর এই প্রসঙ্গেই বিজেপির সঙ্গে শুরু হয় তাঁর টুইট যুদ্ধও। তিনি তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি বিতর্ক সভায় বিজেপিকে আহ্বান জানান। তাঁর এই বার্তার পরেই বিজেপির তরফে জানানো হয়, সময় ও স্থান জানানোর জন্যেও। সেটাও জানান অভিষেক। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে প্রচারে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই বিজেপিকে আহ্বান জানানো হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিজেপির তরফে কেউ যাচ্ছেন না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর সঙ্গে কেউ মঞ্চ শেয়ার করতে চাইছেন না।
বৃহস্পতিবারের সভা থেকেও এই বিষয়টি নিয়ে সুর চড়ান অভিষেক। এমনকি, সভার মাঝেই ভিডিয়ো ক্লিপিং দেখিয়ে বিজেপির ‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে উপস্থিত জনগণকে বিশেষ বার্তা দেন তিনি। সেখানেই কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সাহায্য সম্পর্কে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করা হয়। অন্যদিকে, বিজেপির তরফে এই সব প্রকল্পে একগুচ্ছ দুর্নীতি হয়েছে পালটা অভিযোগ তোলা হয়।