আবার ‘ফুল বদল’। ঘাসফুল থেকে পদ্মফুল, ফের পদ্ম থেকে ঘাসফুল আবার ঘাসফুল থেকে পদ্মে যেতে দেখা গেল ব্যারাকপুরের শ্রমিকদরদী নেতা হিসেবে পরিচিত অর্জুন সিংকে। প্রতিবারই তিনি দলবদল করেছেন এই শ্রমিকদেরই স্বার্থে, এমনটাই দাবি তাঁর। আর এই শ্রমিক শ্রেণি যে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তা শাসকদলকে বুঝিয়ে দিয়েছিল ব্যারাকপুর অঞ্চলের শ্রমিক শ্রেণি। ২০১৯-এ তৃণমূল থেকে পদ্মশিবিরে যোগদানের পরও ব্যারাকপুর থেকে জিতেছিলেন তিনি। তৃণমূল প্রার্থী দ্বীনেশ ত্রিবেদীকে হারান ১৪,৮৫৭ ভোটে। তবে ছবিটা বদলায় ২০২২ সালে মে মাসে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে গিয়ে ফের একবার তৃণমূলে ফিরে যান তিনি। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, ‘জুট সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হয়নি। ভুলবোঝাবুঝির জন্য মাঝে বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম।’ এবার সেই ছবিই ফের বদলায় বৃহস্পতিবার বিজেপি অর্জুন ভার্চুয়ালি যোগাযোগ করতেই।এবার যদি স্যাফ্রন ব্রিগেডের তরফ থেকে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় অর্জুনকেই তাহলে তবে তাঁকে লড়তে হবে বর্তমান মন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের বিরুদ্ধে। কারণ, গত ১০ অগাস্ট ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে যে ৪২ জনের নাম ঘোষণা করা হয় সেখানে ব্যারাকপুর লোকসভা থেকে পার্থ ভৌমিককেই বেছে নেয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব. আর সেখানেই যেন ফের একবার ধাক্কা খেতে দেখা যায় অর্জুনকে। এরপর হাবেভাবে অর্জুন বুঝিয়েও দেন তৃণমূলের প্রতি বিশ্বাস ভঙ্গ হয়েছে তাঁর।সঙ্গে ফের একবার নিজের ‘বুঝাবুঝির ক্ষমতা’-র উপর নিজেই প্রশ্ন তোলেন অর্জুন। তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এরপরেই তাঁর দল বদল নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। এরপরই বঙ্গ রাজনীতির শিরোনামে ঘোরাফেরা করতে থাকে অর্জুন সিং এবং ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র। ১০ তারিখেই প্রায় বেশির ভাগ রাজনৈতিক বিশ্লেষকই আঁচ করতে পারেন, ফের বিজেপিতে ফিরছেন অর্জুন। এরপর অর্জুনের বিজেপিতে ফেরা যে শুধু সময়ের অপেক্ষা তা মালুম হয় মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো যখন জানান, অর্জুন সিং ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ। এরপরই ভার্চুয়াল মোডে অর্জুনের বিজেপিতে যোগদান করার কথা সামনে আসে। এরপর শুক্রবার দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতেই যোগদান করলেন অর্জুন সিং। এদিন অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে ছিলেন দিব্যেন্দু অধিকারীও।
শুক্রবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই সন্দেশখালি থেকে শুরু করে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন তুলতে দেখা যায় অর্জুন সিংকে। রাজ্য সরকারকে একাধিক বিষয় সামনে রেখে আক্রমণ করেন। তাঁর কণ্ঠে শোনা যায় ফের একবার মোদির অনুপ্রেরণা। মোদির আদর্শে চলার জন্য বিজেপিতে প্রত্যাবর্তন, জানিয়ে দেন তিনি। এদিকে দিব্যেন্দুরও বিজেপেক যোগদানের জল্পনা আগে থেকেই ছিল। তা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে জল্পনাও ছিল বিস্তর। এখন দেখার বঙ্গের এই দুই সাংসদকে পদ্ম শিবির থেকে প্রার্থী করা হয় কি না বা করলেও কোন কেন্দ্র থেকে লড়তে চলেছেন তাঁরা।