সন্দেশখালি ঘটনায় প্রশ্নের মুখে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা

সন্দেশখালিতে ইস্যুতে ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্য পুলিশের ভূমিকা। দলবল জুটিয়ে ইডি আধিকারিকদের উপর হামলায় ঘটনায় পুলিশের হাতে যে সাতজন গ্রেফতার হয়েছিলেন তাঁরা নিরাপরাধ অন্তত এমনটাই জানা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই-এর তদন্তে।

গত বৃহস্পতিবার বসিরহাট আদালতে আবেদন জানিয়ে রাজ্য পুলিশের হাতে ধৃত সাতজনকে নিজেদের হেফাজতে নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। খতিয়ে দেখা হয় তাঁদের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন। ঘাটাঘাটি করা হয় পারিপার্শ্বিক তথ্যও। তখনই তদন্তকারীরা বোঝেন এই হামলার ঘটনায় পর্যাপ্ত প্রমাণ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নেই।

অন্যদিকে ধৃতদেরও দাবি, তাঁরা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্তই নন। শাহজাহান ঘনিষ্ট এক পঞ্চায়েত প্রধান তাঁদের থানায় যেতে নাকি নির্দেশ দিয়েছিল। আর যেই মুহূর্তে তাঁরা থানায় পৌঁছয়, পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। ধৃতদের বয়ান কতটা সঠিক তা খতিয়ে দেখতে শনিবার রাজ্য পুলিশের হতে ধৃত সুকোমল সর্দার এবং মেহবুব মোল্লার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। রবিবার রামপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল নামে আরও এক অভিযুক্তের পরিবারের  সঙ্গে কথা বলেন গোয়েন্দারা।

আর এই প্রসঙ্গেই সিবিআইয়ের তরফ থেকে এও জানানো হচ্ছে যে, ধৃতদের বয়ান যদি সত্যি হয়, তাহলে সিবিআই-র আধিকারিকরা মনে করছেন, অপরাধীদের আড়াল করতে শাহজাহান ও তাঁর শাগরেদরা ন্যাজাট থানার আধিকারিক এবং জেলা পুলিশকে প্রভাবিত করেছিল। শুধু তাই নয়, নিরাপরাধ মানুষদের গ্রেফতারও করা হয়েছিল। এদিকে সূত্রে এ খবর মিলছে যে, ধৃতদের বয়ানকে হাতিয়ার করে আদালতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন সিবিআই আধিকারিকরা।

এর পাশাপাশি সিবিআই সূত্রে খবর, ইডির ওপর হামলার ঘটনায় তাদের স্ক্যানারে রয়েছে শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ট আরও বেশ কয়েকজন। ইতিমধ্যে রবিবারেই সাতজনকে নোটিশ দিয়ে তলব করা হয় বলেই সিবিআই-এর তরফ থেকে।সঙ্গে এও জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যার পর বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নোটিস দিয়ে রবিবার সিবিআই দফতরে হাজিরার জন্য আসতে বলা হয়। প্রসঙ্গত, ইডির তদন্তকারী দলের উপর হামলার ঘটনার তদন্তে মোট ১৫ জনকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এরপর রবিবার আরও সাতজনকে তলব করা হয়।

উল্লেখ্য, গত ৫ই জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। সেই সময় দলবল জুটিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে শাহজাহানের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন মাফুজার মোল্লা ও সিরাজুল মোল্লা নামের দুই ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, শনিবার গ্রেফতার হন ধৃত শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগীরও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সন্দেহ, শাহজাহানকে বিভিন্ন জায়গায় গা ঢাকা দিয়ে থাকার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছিলেন তাঁর ভাই শেখ আলমগির। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার সিবিআই অফিসে হাজিরার কথা ছিল আলমগিরের। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। এরপর শনিবার ফের নোটিস পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। সেই নোটিসে সাড়া দিয়ে যেতেই জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। কিন্তু বেশ কিছু ক্ষেত্রে আলমগিরের উত্তর সন্তোষজনক হয়নি বলেই সূত্রের খবর। শেষে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের পর শাহজাহানের ভাই শেখ আলমগিরকে গ্রেফতার করে সিবিআই।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 13 =