কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-এর দাবি দীর্ঘদিন ধরেই জানিয়ে আসছেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। এমনকি এর জন্য দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা আন্দোলনের পথেও নেমেছেন। এদিকে সোমবার ডিএ মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্টে ফের পিছিয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, ‘আমরা হতাশ। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করছি যে কী ভাবে মামলাটির শুনানি করা যায়।’
রাজ্য়ের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই ধাপে ধাপে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৩-এর বাজেট অধিবেশনে এই সংখ্যাটা ছিল ৩ শতাংশ। ২০২৩-এর বড়দিনের আগে এক অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন। এরপর ২০২৪-এর বাজেটে ডিএ বাড়ানো হয় আরও ৪ শতাংশ। এতেও চিঁডে ভিজছে না । কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-এর দাবিতে এখনও অনড় রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, এই ডিএ নিয়ে স্টেট অ্যাডমিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল বা স্যাট-এ জয় হয় রাজ্যের সরকারি কর্মীদের। এরপর মামলায় জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্টে। ডিভিশন বেঞ্চেও জয় হয় রাজ্যের সরকারি কর্মীদের। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টে রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জি জানানো হয় রাজ্যের পক্ষ থেকে। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়। এরপর ডিএ নিয়ে একটি এসএলপি সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়।
এরপর সুপ্রিম কোর্টে এই মামলাটি পিছিয়েছে একাধিকবার। আর এই প্রসঙ্গেই রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, ‘আমরা হতাশ’। ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রথম সুপ্রিম কোর্ট ওঠে ডিএ মামলা। এরপর তারিখ মেলে সেই বছরই ৫ ডিসেম্বর। কিন্তু, সেই দিনও মামলাটি পিছিয়ে তারিখ দেওয়া হয় ১৪ ডিসেম্বর। এরপর ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি, ১৩ মার্চ, ২১ মার্চ, ১১ এপ্রিল, ২৮ এপ্রিল, ১৪ জুলাই এবং ৩ নভেম্বর মামলাটি ওঠে সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু, মামলাটির প্রেক্ষিতে সুরাহা হয়নি। এরপর আরও কয়েকবার সুপ্রিম কোর্টে ওঠে ডিএ মামলা এবং তা পিছিয়ে যায়।
উল্লেখ্য, রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ইতিমধ্যেই রাজ্যের ঘোষণা করা বর্ধিত ডিএ পাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী আগেও জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সরকারি কর্মীরা তাঁর কাছে পরিবারের মতো। ডিএ বৃদ্ধির সময় তিনি এও বলেছিলেন, ‘ডিএ ঐচ্ছিক বিষয়। বাধ্যতামূলক নয়।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণায় যখন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশের মধ্যে খুশির ঢেউ সেই সময় অপর অংশ আইনি লড়াই করছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চও ক্রমশ সুর চড়াচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট ডিএ মামলার প্রেক্ষিতে ঠিক কী নির্দেশ দেয়, এসএলপি নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এখন সব নজর সেই দিকেই।