কলকাতা হাইকোর্টে শেষ হয়েছে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি। প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে হাইকোর্টে বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে চলল এই শুনানি। এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলা দীর্ঘদিন ধরে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল- ডিভিশন বেঞ্চে ঘোরাফেরা করেছে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, বিচারপতি অমৃতা সিনহা-সহ একাধিক বিচারপতির এজলাসে এই মামলা বিচারাধীন ছিল। পরবর্তী ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি সংক্রান্ত নিয়োগ মামলা শুনানির জন্য গঠিত হয় বিশেষ বেঞ্চ।এরপর এই বেঞ্চে গত ৫ ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় শুনানি। আপাতত রায়দান স্থগিত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঠিত হয় বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এই মামলার শুনানি শেষ কয়েক সপ্তাহ ধরে কার্যত প্রতিদিনই চলে। এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের পর্যবেক্ষণ, ‘এই নিয়োগপ্রক্রিয়া থেকে ভাল কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন। অতিরিক্ত নিয়োগ সরাসরি বাতিল হাওয়া উচিত।’
আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়াল, ‘এটা সুপরিকল্পিত অপরাধ। ঘোষিত শূন্যপদের থেকেও বেশি সংখ্যক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে। এই অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে যে আধিকারিকরা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হোক। এই সব টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক। এই মামলার প্রেক্ষিতে আদালত যদি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ না নেয় তাহলে এই অপরাধপ্রবণতা কমবে না। অপরাধীরা এই ধরনের অপরাধ করতেই থাকবে। এই আদালত তো ওএমআর দেখার সুযোগ দিয়েছিল। কজন এসে বলেছেন যে এই ওএমআর আমার নয়?’ এরপরই বিচারপতি বসাক জানান, ‘বিধিবদ্ধ সংস্থার আধিকারিকদের জন্য ফৌজদারি মামলা তো আছেই।’ তখনই সওয়াল করেন বিতর্কিত চাকরি প্রাপকদের আইনজীবী প্রমিত রায়। তিনি বলেন, ‘এসএসসি এবং সিবিআই কেউই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আদালত নিজের স্বতন্ত্র সিদ্ধান্তের ওপর বিশ্বাস রাখুক।’ এরপরই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘তাহলে কার ওপর আমরা বিশ্বাস করব?’ রায় ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে আদালত যে মন্তব্য করেছে, তাতে রায়েরই ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।