প্রতি মুহূর্তে স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তন করেছে সাইবার অপরাধীরা। গত ক’দিনে রাজ্যের কয়েক হাজার মানুষ তাঁদের মেলে হুমকি বার্তা পেয়েছেন পর্ন দেখার ঘটনায় গ্রেফতার করা হতে পারে। সবথেকে মজার কথা হল এই হুমকি বার্তা পাঠানো হয়েছে আবার ভুল ইংরেজিতে। এই বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোর্ট অর্ডার সম্পর্কে জেনে নিন। একদিনের মধ্যে যোগাযোগ না করলে বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সেখানে প্রেরকের পরিচয় হিসেবে লেখা রয়েছে তিনি চিফ অফ পুলিশ শুধু নন, এমনকী প্রসিকিউটর ওভার মাইনরস অ্যান্ড অফেন্সেস রিলেটেড টু সাইবার ক্রাইম। এদিকে দফতরের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ন্যাশনাল হাইওয়ে ৮, মহিপালপুর, নিউ দিল্লি-১১০০৩৭। এখানে বলে রাখা ভাল যে পুরো বিষয়টাই ভুয়ো।
এই সব মেল পেয়ে ভয় বা আতঙ্কে ওই ঠিকানায় যোগাযোগ করলেই শুরু হবে প্রতারকদের খেলা। প্রথমেই তারা জানাবে, আপনি সম্প্রতি এমন কোনও ওয়েব সাইটে ঢুকেছেন বা অজানা লিঙ্কে ক্লিক করেছেন যেখান থেকে আপনার সামনে পর্ন সাইট খুলেছে। সেটি আপনি দেখেছেন। এই পর্ন দেখার সব তথ্য আপনার ইন্টারনেট আইপি অ্যাড্রেস থেকে দিল্লি পুলিশের সাইবার ক্রাইম সেলের কাছে অভিযোগ আকারে জমা পড়েছে। আর ওই ছবিতে চাইল্ড পর্ন ছিল, ফলে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা হওয়ার পরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও বেরিয়েছে। আর সেই কারণেই একজন দক্ষ পুলিশ অফিসারের পরামর্শ নিয়ে আইনজীবীর সাহায্য নিতে হবে। তিনি আপনার সামনে আসবেন না, আপনাকেও যেতে হবে না তাঁর কাছে। শুধু মোটা টাকা পেমেন্ট করলেই অনলাইনে স্কাইপের মাধ্যমে সমস্ত মামলার ফয়সালা করে দেবেন তিনি। পুলিশ আর গ্রেপ্তার করতে আসবে না আপনাকে। সূত্রে এ খবরও মিলছে, কলকাতার বেশ ক’জন ব্যক্তি পাল্টা মেল করে বিষয়টি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করায় প্রতারকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আপনার মেল আইডি আমাদের কাছে রয়েছে। ফলে শুধু পুলিশ পাঠানোই নয়, আপনি যেখানে কাজ করেন এবং যাঁরা বন্ধুবান্ধব রয়েছে, প্রয়োজনে বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
আর এখানেই তৈরি হচ্ছে সমস্যা। ফলে যাঁরা প্রত্যেকে নিজের সম্পর্কে একটা স্ব্চচ্ছ ধারনা রাখতে চান তাঁরা এই ফাঁদে পা দিয়ে দিতে পারেন। আর এখানেই সাইবার ক্রাইম বিভাগের আধিকারিকদের পরামর্শ, কোনও ভাবে এমন মেলের জবাব দেবেন না। ওয়েবসাইট বা অন্যান্য কাজের জন্য পৃথক মেল ব্যবহার করুন।