এবার মহুয়া মৈত্রের বাবার বাড়িতে সিবিআই হানা। শনিবার সকাল থেকে কলকাতার একটি আবাসনে তল্লাশি চালাতে দেখা যায় কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকদের। প্রায় ৮ থেকে ১০ জন অফিসার যান সেখানে। সূত্রের খবর, যে ফ্ল্যাটে এই তল্লাশি চালানো হচ্ছে, সেটি পেশায় ব্যবসায়ী ডি এল মৈত্র নামে এক ব্যক্তির। এদিকে আবার কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় গোটা আবাসন। নিরাপত্তা রক্ষী জানান, উনি মহুয়া মৈত্রের বাবা। এদিকে আবার তল্লাশি চলাকালীন এক মহিলাকে গাড়িতে চেপে এসে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করতে দেখা যায়। যে গাড়িতে তিনি এসেছিলেন সেই গাড়ির চালককে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, যে মহিলা আবাসনে প্রবেশ করলেন তাঁর নাম মঞ্জু মৈত্র। সঙ্গে এও জানান, মঞ্জু মৈত্র হলেন মহুয়া মৈত্রের মা। তবে মহুয়া মৈত্র এই ফ্ল্যাটে নেই। অন্যদিকে সিবিআই আধিকারিকদের হাতে দেখা যায় প্রিন্টার। বিশেষ কোনও নথির খোঁজে তদন্তকারীররা ওই বাড়িতে গিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
গত ১৯ শে মার্চ মহুয়ার মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ঘুষ নিয়ে প্রশ্ন’ কাণ্ডে লোকপালের নির্দেশে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই বিষয়কে সামনে রেখেই মহুয়া মৈত্রের বাবা দীপেন্দ্রলাল মিত্রের আলিপুরে ফ্ল্যাটে এলেন সিবিআই আধিকারিকেরা। প্রাক্তন সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে প্রশ্নের অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল লোকপাল। এরপর সেই পথেই হাঁটে সিবিআই৷ সিবিআই মহুয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে৷ মহুয়ার বিরুদ্ধে এমনিতেই প্রাথমিক তদন্তের কাজ শুরু করে দিয়েছিল সিবিআই৷
সূত্রের খবর, লিখিত নির্দেশে সিবিআইকে ছ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে লোকপাল৷ পাশাপাশি, তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে নিয়মিত লোকপালের কাছে রিপোর্ট জমা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ শিল্পপতি হীরানন্দানির থেকে ঘুষ নিয়ে সংসদে প্রশ্ন করার অভিযোগ উঠেছিল মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে৷ বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে প্রথম এই অভিযোগ করেছিলেন৷ সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখে মহুয়াকে সংসদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় সংসদের এথিক্স কমিটি৷ সেই মতো মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত বছর মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজ হয়৷
নিশিকান্ত দুবে নিজেও মঙ্গলবার তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে মহুয়ার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের কথা জানিয়েছেন৷ বিজেপি সাংসদ লিখেছেন, ‘সত্যের জয় হল। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল লোকপাল৷ প্রমাণিত হল যে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ হিরানন্দানির সঙ্গে মিলে দেশের নিরাপত্তাকেই ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন৷’
তবে এটাও ঠিক আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মহুয়ার ইস্যুকে কাজে লাগাবে তৃণমূল থেকে বিজেপি উভয় শিবিরই। শুধু প্রেক্ষাপট থাকবে ভিন্ন।