এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৭৭১ জনের কাছে নতুন ভোটার পরিচয়পত্র পৌঁছায়নি। এর মধ্যে ৫২ হাজার ৮৫২ জনকে তাঁদের সচিত্র পরিচয়পত্র ডাকে পাঠানো হলেও তাঁরা হাতে পাননি। কমিশন এজন্য সরাসরি দায়ী করেছে ডাক ব্যবস্থাকে। যদিও বহু জেলায় নির্বাচন আধিকারিকের দফতকরেই এখনও পড়ে রয়েছে হাজার হাজার সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, রাজ্যে এবার নতুন সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র তৈরি হয়েছে ২৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ১১৭টি। এর মধ্যে নতুন ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ লক্ষ ৩০ হাজার ৯৯৮। এর একটা বড় অংশের বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছর। এদের সচিত্র পরিচয় পত্র দেওয়া হয়। পাশাপাশি কিছু ভোটার তাঁদের পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদেরও নতুন করে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে ২৮ লক্ষ ৭৬ হাজার ১১৭টি সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র তৈরি করা হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক নতুন ভোটার কার্ড তৈরি হলেও তার সিংহভাগ পাঠানোই হয়নি পোস্ট অফিসে। নিয়ম অনুযায়ী, সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র তৈরির পরে কমিশন তরফে ডাকে তা ভোটারের বাড়িতেই পৌঁছে দেওয়ার কথা। ডাক বিভাগ না পারলে নির্বাচন আধিকারিকরা তা বুথ লেভেল রির্টানিং অফিসার অর্থাৎ বিএলআরও’র মাধ্যমে ভোটারদের হাতে পৌঁছে দিতে হয়। কারণ, অনেক সময়েই ডাক বিভাগ লোকাভাবের অজুহাত দেখিয়ে সময় মতো সেগুলি পৌঁছে দেয় না। কখনও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি তাই কমিশনের সচিত্র পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া যায়নি বলে দাবি করে তারা। তখনই বিএলআরও সাহায্যে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে কমিশন।
রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সম্প্রতি জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠকে এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বৈঠকে তাঁর দেওয়া তথ্যই বলছে, গত ১৬ মার্চ পর্যন্ত রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার পরিচয় পত্র ডাক বিভাগে না পাঠিয়ে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসে ফেলে রাখা হয়েছে যার মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখনও সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র না পাওয়ার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সংখ্যার বিচারে দক্ষিণ দিনাজপুরে ৮,৫৪৩ টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৫,৬০৮, হাওড়ার ১৯,৪৪১, হুগলিতে ২৯,৩০৬, পূর্ব মেদিনীপুরের ১১,২৫৭টি এবং পশ্চিম বর্ধমানের ৫,৯০৮টি, উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৭,৭৭৭টি, নদিয়ায় ২৭,৮৪৬টি সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র পড়ে রয়েছে। ফলে ভোটের সময়ে এদের সমস্যায় পড়তে হবে।