উত্তর কলকাতায় লোকসভা আসনে তাঁকে প্রার্থী করা হবে বলে আশা করেছিলেন বিজেপির তরুণ নেতা সজল ঘোষ। কিন্তু ভোটের ঠিক আগে তৃণমূলের পদত্যাগী বিধায়ক তাপস রায়ের বিজেপিতে যোগদান একটু বদলে দেয় সব সমীকরণ। তাপসকে উত্তর কলকাতার লোকসভা আসনে প্রার্থী করা হয়েছে। তবে এবার সজলকেও হতাশ করলেন না শুভেন্দু-সুকান্ত। তাঁকে প্রার্থী করা হল বরানগর বিধানসভায়।
বরানগর বিধানসভায় টানা তিনবারের বিধায়ক তাপস রায়। তিনি তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কারণে বরানগরে উপনির্বাচন অনিবার্য হয়ে উঠেছে। লোকসভা ভোটের সপ্তম দফায় অর্থাৎ ১ জুন সেখানে উপনির্বাচন হবে। সেই ভোটে বিজেপির প্রার্থী করা হল সজলকে। এর কারণ, কলকাতা উত্তর লোকসভা আসনে প্রার্থী হতে না পারায় সজলের যেন কোনও হতাশা না থাকে। ছাত্র রাজনীতি করার সময় থেকেই সজল উত্তর কলকাতায় দামাল ছেলে বলে পরিচিত। কিছুদিন তৃণমূলে ছিলেন পরে বিজেপিতে যোগ দিয়ে কলকাতা পুরনির্বাচন জিতে কাউন্সিলরও হয়েছেন। শুভেন্দুরা এই কারণেই সজলকে বরানগরে প্রার্থী করলেন যাতে তাপস রায়কে জেতাতে এই যুবনেতা সমস্ত শক্তি ঢেলে দেন। আবার তাপস রায়েরও দায়িত্ব রইল বরাহনগরে সজলকে জেতানোর। বরানগরে সজলের কোনও মজবুত ভিত নেই। কিন্তু তাপস রায় তিনবারের বিধায়ক হওয়ায় তাঁর মজবুত ভিত রয়েছে। ফলে বরাহনগরে সজলকে জেতাতে তাপস রায়কে পুরোদস্তুর সময় দিতে হবে।
এদিকে ভুলে গেলে চলবে না, তাপস রায়ের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা যখন তুঙ্গে সেই সময় তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপির এই কাউন্সিলর-ই। বলেছিলেন, ‘কাকু’-কে প্রণাম করে এসেছেন। সজল বলেছিলেন, ‘তাপসকাকু আমার রাজনৈতিক গুরু। অসামাজিক কাজের জন্য দল ছেড়েছেন তিনি। ওঁকে প্রণাম করে এলাম।’ এরপর রাজনৈতিক জল অনেক দূর গড়িয়েছে। তাপস রায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে যোগদান করেছেন বিজেপিতে। শুধু তাই নয়, ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, ২০২১ সালে গ্রেফতারির পর লাইমলাইট-এ চলে আসেন সজল। এর পাশাপাশি পুজোর উদ্যোক্তা হওয়ার সুবাদে তাঁর আলাদা একটা জনপ্রিয়তা রয়েছে। পাশাপাশি কাউন্সিলর হিসেবেও সক্রিয় তিনি। আর এখানেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এই আসন তৃণমূলেরই ছিল।
তবে সমস্যা একটা থেকেই গেল। বরানগরের উপনির্বাচন এবং উত্তর কলকাতার লোকসভা ভোট একই দিনে। তাই ভোটের দিনে সজলকে বরাহনগর এবং তাপস রায়কে উত্তর কলকাতায় পড়ে থাকতে হবে। কেউ একে অন্যের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ভোট করাতে পারবেন না।