ছেলের মৃত্যুতে সুবিধা পাবেন পুত্রবধূর সঙ্গে মাও, নির্দেশ আদালতের

কর্মরত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছিল ব্রজদুলাল মণ্ডলের। এরপর সরকারি নিয়ম অনুসারে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা পাত্র মণ্ডল সেই চাকরি পান। শাশুড়িকে দেখভালের শর্তও মেনে নেন। চাকরির পাশাপাশি নিচ্ছিলেন স্বামীর পেনশনও। এদিকে চাকরি পেয়েই ওই মহিলা চলে যান বাপের বাড়ি এবং দ্বিতীয় বিয়েও করেন। আর্থিক সাহায্যের রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই বউমার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে আদালতের দরজায় কড়া নাড়েন প্রবীণা। আর সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এবার উল্লেখযোগ্য নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মামলাটির প্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা নির্দেশ দেন, স্বামীর মৃত্য়ু মানেই সমস্ত অধিকার বা সুবিধা কেবলমাত্র স্ত্রী পেতে পারেন না। তাতে প্রাপ্য রয়েছে মায়েরও।

প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ছিলেন বজ্রদুলাল মণ্ডল। ২০১৪ সালে কর্মরত অবস্থাতে বজ্রাঘাতে মারা যান। এরপর তাঁর স্ত্রী সরকারি নিয়মানুসারে গ্রুপ-সি কর্মীর চাকরি পান। সেই সময় তিনি মেনে নিয়েছিলেন যে শাশুড়ি মাকে তিনি আর্থিকভাবে দেখাশোনা করবেন। তবে বাস্তবে তা হয়নি। ব্রজদুলালের মায়ের অভিযোগ, চাকরি পাওয়ার পরেই শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে যান বউমা। সেখানে গিয়ে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর শাশুড়ির সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি। চাকরির পাশাপাশি স্বামীর মৃত্যুর পর পেনশনও পাচ্ছিলেন তিনি। ওই প্রবীণার আইনজীবী এই পুরো বিষয়টি বেআইনি বলে আদালতকে জানায়।

এরই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা স্পষ্ট জানিয়েছেন, স্বামীর মৃত্যুর পর চাকরি এবং পেনশন দুই ক্ষেত্রেই কেবলমাত্র স্ত্রীর অধিকার থাকতে পারে না। মায়েরও প্রাপ্য রয়েছে। মৃত ব্যক্তির মাকেই প্রাপ্য পেনশন দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এরই পাশপাশি ২০১৫ সালের পুরনো নির্দেশ বদল করে পেনশন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের অধিকর্তা এবং গ্রুপ ইনস্যুরেন্স সংস্থাকে ওই প্রয়াত শিক্ষকের মাকে পেনশন দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। সঙ্গে আদালতের তরফ থেকে এ নির্দেশও দেওয়া হয়, যাবতীয় নির্দেশ আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর করতে হবে। এই নির্দেশের ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তিতে ওই প্রবীণা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 7 =