মথুরাপুরের তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদার এবং তাঁর স্ত্রী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিলি হালদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েও গত একমাসে এফআইআর দায়ের না করায় মথুরাপুর থানার ওসিকে শো-কজ় করা হল কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে। এই প্রসঙ্গে শুক্রবার বিচারপতি সেনগুপ্ত পুলিশ প্রশাসনের কাছে জানতে চান, ‘ভূপতিনগরের সময়ে অনুসন্ধান না করেই শুধু অভিযুক্তের স্ত্রীর বক্তব্যে এফআইআর নিলেন, আর এক্ষেত্রে গুরুতর অভিযোগ থাকার পরেও এফআইআর নয় কেন?’ এর পাশাপাশি বিচারপতি সেনগুপ্ত এও স্পষ্ট করে দেন, ওসি-কে ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে হবে, কেন এক মাসের উপরে এফআইআর না করে কেন অভিযোগ ফেলে রাখা হয়েছে তাও। এই প্রসঙ্গে এসপি সুন্দরবনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনওভাবে অভিযোগকারীদের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে হবে। এদিকে শুক্রবার শুনানি চলাকালীন রাজ্যের বক্তব্য, ‘অনুসন্ধান করা হচ্ছে। বিডিও দেখছেন গোটা বিষয়।’ কিন্তু রাজ্যের বক্তব্য শোনা মাত্রই বিরক্ত হয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানতে চান, ‘হঠাৎ অনুসন্ধান কেন?’ সঙ্গে এ প্রশ্নও করেন, এখানে আবার বিডিও আসছেন কোথা থেকে তা নিয়েও। পাশাপাশি এ প্রশ্নও করেন, কোর্ট কেন অর্ডার দেবে? তা নিয়েও। কারণ, যেখানে প্রাথমিক ভাবে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে আবার অনুসন্ধানের প্রয়োজন নেই বলেই মনে করেন বিচারপতি। এরই রেশ ধরে বিচারপতি এদিন এ প্রশ্নও করেন, ‘আপনারা ভূপতিনগরে ক্ষেত্রে ধৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান না করেই এফআইআর করে দিলেন। আর এখানে অভিযোগে যা রয়েছে, তাতে অভিযোগ জানানোর এক মাস পরেও এফআইআর করার মতো জায়গায় পৌঁছল না পুলিশ! তথ্য নথি নষ্ট করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এটা চেষ্টা নয়!’ এরপরই তিনি ওসি-কে শোকজ করেন।
প্রসঙ্গত, আলোচনায় যে পঞ্চায়েত, মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বর্তমানে বিজেপির দখলে। আগে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন বাপি হালদার। পরে এই পঞ্চায়েত মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়। তখন প্রধান হন বাপির স্ত্রী শিলি। অভিযোগ, শিলি খাতায় কলমে প্রধান হলেও সব কিছু দেখভাল করতেন বাপিই। ২০২৩ সালে বিজেপি এই পঞ্চায়েতের দখল নেয়। তারপর অভিযোগ তোলে, ২০১৮-১৯ সালের পর থেকে এই পঞ্চায়েতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তার ভিত্তিতেই এই মামলা দায়ের।