শিক্ষা দুর্নীতি মামলায় মুখ্যসচিবকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি আদালতের

শিক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সিবিআই কনসেন্ট দেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সরকারি আমলা, আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তদন্তের ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল মুখ্যসচিবকে। তবে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির পর্যবেক্ষণ, মুখ্যসচিব এই অপরাধের গুরুত্ব বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। মুখ্যসচিব নিজের দায়িত্ব পালন করতেও ব্যর্থ হয়েছেন। দ্রুত ট্রায়ালের জন্য এই অনুমতি জরুরি। নিজের দায়িত্ব পালন করতেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি মঙ্গলবার জানতে চান, ‘এবার কি ধরে নেব, যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা এতটাই প্রভাবশালী যে মুখ্যসচিবও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না?’

প্রসঙ্গত, শিক্ষা সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলা চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। এদিকে মুখ্যসচিবের অনুমতি না পেলে এগোচ্ছে না তদন্ত। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে নেতা-মন্ত্রী ছাড়াও একাধিক সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। মুখ্যসচিবের অনুমতি ছাড়া তাঁদের ক্ষেত্রে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় অনুমতি দিতে দেরি হওয়ায় প্রথমে মুখ্যসচিবকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজিরা দিতে বলা হয়েছিল। তাতেও তিনি উপস্থিত না হওয়ায়, পরে তাঁকে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার কথা বলা হয়। পরে রাজ্যের আবেদনে বিচারপতি সেই নির্দেশ ফিরিয়ে নেন। এরপর নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় মুখ্যসচিবকে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তবে শেষ পর্যন্ত সেই হলফনামা পেলেও তাতে সন্তুষ্ট নয় হাইকোর্ট। এরপরই মঙ্গলবার কড়া ভাষায় মুখ্যসচিবকে কার্যত সতর্ক করতে দেখা যায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচিকে। এমনকি এদিন বিচারপতি এও বলেন, ‘শেষবারের মতো জিজ্ঞেস করছি। এরপর আদালত অবমাননার রুল জারি করতে বাধ্য হব।’

এদিকে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, যেহেতু নির্বাচন চলছে, সেই কারণে আদর্শ আচরণ বিধি লাগু থাকায় লোকসভা নির্বাচনের পরে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, নির্বাচন কমিশনের কি কোনও কিছু করার আছে এখানে? মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট এখানে কী ভাবে লাগু হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। দু’সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ মুখ্যসচিবকে।

পালটা, এজি কিশোর দত্ত জানান, আরও কিছুটা সময় নেওয়া হচ্ছে। পুরো বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হবে। শেষবারের মতো সময় দেওয়া হোক। জামিন, ট্রায়ালের পদ্ধতি মসৃন করার জন্যই এটা লাগবে। হাইকোর্ট জানায়, এই লোকগুলি এতটা গুরুত্বপূর্ণ যদি এটা কারচুপি হয় তাহলে কাল বলবেন, পাচঁ বছর অন্য কাজ আছে। এরপর অবমাননার রুল জারি করার প্রসঙ্গ তুলে হুঁশিয়ারির সুরে সাবধান করতে দেখা যায় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 13 =