সিভিকদের আচরণ বদলাতে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন লালবাজারের

পথচারী, গাড়ি-চালকদের সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারদের আচরণ নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ জমা পড়ছে লালবাজারে। সিভিক ভলান্টিয়ারদের দুর্ব্যবহারে ভাবমূর্তি ধাক্কা খাচ্ছে পুলিশেরই। এই অবস্থায় বিশেষ এক কর্মশালার আয়োজন করতে চলেছে লালবাজার। সিভিক ভলান্টিয়াররা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কী রকম ব্যবহার করবেন, কি তাঁরা করতে পারেন, কি পারেন না, কঠিন পরিস্থিতিতে কি করণীয় এ সব বিষয়ে যুগ্ম-কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসাররা ক্লাস নেবেন। সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও। মাথা ঠাণ্ডা রেখে কী ভাবে কাজ করা যায় তাঁরা সে পরামর্শ দেবেন সিভিকদের।

বছর কয়েক আগে লেকটাউন মোড়ে তৃণমূল সাংসদ প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগে লেক গার্ডেন্সের এক তরুণীকে গাড়ির কাগজপত্র না থাকায় চড় মারার অভিযোগ ওঠে এক সিভিকের বিরুদ্ধে। থানায় গেলেও সিভিক ভলান্টিয়াররা খারাপ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন কয়েকবার। তবে লালবাজারের কর্তারা আশাবাদী, সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্যে আচরণবিধির প্রশিক্ষণে সুফল মিলবে।

লালবাজার সূত্রে খবর, ১০টি করে থানার সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে আয়োজিত হবে কর্মশালা। লোকসভা ভোট মিটলেই শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। লালবাজারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছেন প্রাক্তন পুলিশকর্তারাও। রাজ্যের প্রাক্তন ডিজি অধীর শর্মার মতে, ‘ভালো উদ্যোগ। এই ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়মিত হওয়া জরুরি।’ এদিকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের থেকে একই অভিযোগ উঠছে যে, ‘সিভিকরা অনেকে নিজেদের পুলিশের সমকক্ষ মনে করেন। খারাপ আচরণ করা নিয়ে দু’বার ভাবেন না। এটা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। কর্মশালা খুব জরুরি।’

প্রাক্তন পুলিশকর্তারা মনে করেন, সিভিক ভলান্টিয়ারদের আইনের পাঠের পাশাপাশি কী ধরনের কাজ তাঁদের করতে হবে, তাঁদের ক্ষমতা কতটা, কোথায় কখন আচমকা পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে, তা অনুধাবনের ক্ষমতা এসবই প্রশিক্ষণে থাকা উচিত।

এদিকে সিভিক ভলান্টিয়ারের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে, ‘দিনে আট ঘণ্টা কাজ করার কথা। সেখানে অনেক সময়েই ১২-১৪ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। ফলে অনেক সময়ই সামান্য কারণে মাথা গরম হয়ে যায়। যে কাজ আমাদের করার কথা নয়, তাও করতে হয়। সব কিছুতেই থানার সিনিয়র অফিসাররা আমাদের সামনে ঠেলে দেন। ফলে আমাদেরই খারাপ কথা শুনতে হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − five =