তৃণমূলের শিক্ষা সেলের অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র রাজভবন চত্বর

তৃণমূল শিক্ষা সেলের রাজভবন অভিযানে তুলকালাম। রাজভবনের অদূরে গার্ডরেল দিয়ে মিছিল আটকায় পুলিশ। বাধা অতিক্রম করে রাজভবনে পৌঁছনোর চেষ্টা করেন মিছিলকারীরা। পুলিশের সঙ্গে বচসা এবং ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার দুপুরে রাস্তায় নেমেছিল তৃণমূলের শিক্ষা সেল ও অধ্যাপক সংগঠন। রানি রাসমণি এভিনিউ থেকে শুরু হয় মিছিল। মিছিলের অভিমুখ রাজভবনের দিকে। হাতে কালো পতাকা। ব্যাঙ্গাত্মক কার্টুন-সহ প্ল্য়াকার্ড। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের পদত্যাগের দাবিতে ব্যানার হাতে রাজভবন অভিযান তৃণমূল শিক্ষা সেলের। পূর্ব ঘোষিত এই কর্মসূচি ঠেকাতে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল পুলিশ। রাজভবনের সামনে মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশকর্মীকে।

তৃণমূল শিক্ষা সেলের মিছিল রাজভবনের গেট পর্যন্ত পৌঁছানোর কিছুটা আগেই ব্যারিকেড দিয়ে আটকায় পুলিশ। তাতেই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বচসা শুরু হয়। একপ্রস্থ ধস্তাধস্তিও হয়। শুরু হয় ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল শিক্ষা সেলের সদস্যরা। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কিছুটা ধস্তাধস্তির পরিস্থিতিও তৈরি হয় মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষক-অধ্যাপকদের। ধস্তাধস্তির সময় তৃণমূল শিক্ষা সেলের সভাপতি মইদুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। জামা ছিঁড়ে যায় তাঁর। তাঁকে গাড়িতে করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এই ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।

এদিনের মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন সুদেষ্ণা রায়ও। তাঁর বক্তব্য, ‘সাংবিধানিক পদ বা রাজনৈতিক পদ বা কোনও উচ্চ পদে বসে থাকার সুযোগ নিয়ে, যদি কেউ মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেন, তাহলে তার প্রতিবাদ দরকার। তদন্ত হওয়া দরকার। আমি সেই জন্যই প্রতিবাদ করতে এসেছি।’

তৃণমূল শিক্ষা সেলের রাজভবন অভিযানে পুলিশের ভূমিকা যা ছিল, সেটাকে পুলিশের ‘রাজধর্ম’ হিসেবেই ব্যাখ্যা করছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি রাজভবন অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, ‘পুলিশ সেখানে রাজধর্ম পালন করে এবং বিক্ষোভকারীদের আটকায়। পুলিশ তাদের রাজভবনের দিকে যেতে দিতে পারে না। এটা বিরোধীদের শেখা উচিত।’  উল্লেখ্য, রাজভবনের অস্থায়ী মহিলা কর্মীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে ইতিমধ্যেই সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাজ্যপাল। এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীও। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে হেয়ার স্ট্রিট থানা তদন্তও করছে। সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এনে তার ভিত্তিতে প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান গ্রহণের পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে রাজভবনের ৬ কর্মীকে। কিন্তু একাধিকবার তাঁরা হাজিরা এড়িয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তারই মাঝে এক নৃত্যশিল্পীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নবান্নে জমা পড়েছে। একের পর নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার পথে নামেন তৃণমূল শিক্ষাসেলের সদস্যরা। রাজ্যপাল বোসের ইস্তফা দাবি করেন তাঁরা। যদিও শ্লীলতাহানির  অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজ্যপাল বোস। রাজভবন থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। ভোটের বাংলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করা হচ্ছে। সত্য সামনে আসবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 − 4 =