অনেকেরই ধারনা, হাই ব্লাড প্রেসার বড়দের রোগ। এই অসুখ ছোটদের হয় না। আর সেই কারণেই তারা সন্তানের শরীরে হাই ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরও সেগুলির দিকে ফিরে তাকান না। ফলে তলেতলে বিপদ বাড়তেই থাকে। এমনকী ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ে সন্তানের একাধিক অঙ্গ। তাই বিপদ ঘটার আগেই সকল অভিভাবকদের বাচ্চাদের হাই ব্লাড প্রেসার নিয়ে সাবধান হতে হবে।
প্রথমত, সন্তানের মাথা ব্যথা করলে, চোখে আবছা দেখলে, তার মাথা ঘুরলে, নাক দিয়ে রক্ত পড়লে, হৃদগতি খুব বেড়ে গেলে অবশ্যই একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এই সমস্যার পিছনে হাই ব্লাড প্রেশারের মতো জটিল অসুখ থাকলেও থাকতে পারে।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই বাচ্চাদের শরীরে এই রোগের কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। কিন্তু তলেতলে বাড়তে থাকে সমস্যা। তাই সন্তানের শরীরে লক্ষণ থাকুক না থাকুক, নিয়মিত ব্লাড প্রেসার মাপা জরুরি।
হাই ব্লাড প্রেসারকে অবহেলা করলে হার্টের ভয়াবহ ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। এমনকী জটিলতার মুখে পড়তে পারে কিডনি, চোখ সহ দেহের একাধিক অঙ্গ। তাই সন্তানের শরীরে ব্লাড প্রেশারের কোনও লক্ষণ দেখলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়ান। তাতেই উপকার পাবেন।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, রক্তচাপ বাড়ার পিছনে অন্য কোনও রোগ না থাকলে তাকে বলা হয় প্রাইমারি হাইপারটেনশন। অপরদিকে কিডনির অসুখ, হরমোনজনিত সমস্যা, রক্তনালীর সমস্যা, ফুসফুসের অসুখ, হার্টের সমস্যা এবং কিছু ওষুধের কারসাজিতে অনেক সময় প্রেশার বাড়ে। আর এই সমস্যার নাম হল সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন। তাই সবার প্রথমে একজন চিকিৎসক ঠিক কী কারণে প্রেসার বেড়েছে, সেই দিকটি খুঁজে বের করেন। তারপর শুরু হয় চিকিৎসা।
সন্তানের ব্লাড প্রেসার বাড়লে তাকে ভুলেও নুন খাওয়ানো চলবে না। এমনকী পারলে তার ফাস্টফুড খাওয়ার লোভ সামলে নিতে হবে। বদলে তার পাতে জায়গা করে দিন শাক, সবজি এবং ফল। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
এর পাশাপাশি সন্তানকে রোজ কিছুটা সময় ব্যায়াম করাতে হবে। আর সে ব্যায়াম করতে না চাইলে ফুটবল, ক্রিকেট খেলতে দিন। কিংবা তাকে সাইকেল চালাতে বা সাঁতার কাটতেও দিতে পারেন। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
চিকিৎসক যদি এই সমস্যার জন্য সন্তানকে ওষুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন, তাহলে সেই নিয়মটা মেনে চলতে হবে। আর এমন পরিস্থিতিতে ভুলেও তার ওষুধ বন্ধ করবেন না। এই ভুলটা করলে কিন্তু বড়সড় বিপদে পড়বে সন্তান। এমনকী তার পিছু নেবে একাধিক জটিল অসুখ।