অলোকেশ ভট্টাচার্য
নিরাপত্তার কারণে পর্যটকদের গুরুদংমার লেক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করল সিকিম প্রশাসন। গত অক্টোবর মাসে হিমবাহ ফেটে ভয়াবহ ধস এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টি নেমেছিল এই লেকে। সিকিমের সেই দুর্যোগের জেরে দীর্ঘদিন পর্যটকদের এখানে আসা সম্ভব হয়নি। রাস্তা খারাপ থাকায় সিকিমে পৌঁছতে পর্যটকদের যেতে হয়েছে ঘুরপথে। এবার চলতি মরশুমে ঝড়বৃষ্টি এবং খারাপ আবহাওয়ার কারণে পর্যটকদের নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চায় না সিকিম প্রশাসন। আর এর প্রভাব পড়েছে লাচেনের পর্যটনে। লাচুংয়ে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও কার্যত ফাঁকা লাচেন। কারণ, জনপ্রিয় গুরুদংমার লেকে কোনও পর্যটককে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
একদিকে যখন বছরের শুরুর দিকেই চার লাখ পর্যটক সিকিমের নানা পাহাড়ি এলাকায় বেড়াচ্ছেন, তখন গুরুদংমার লেক বন্ধ থাকায় খানিক মনমরা ভ্রমণপিপাসুরা। মঙ্গনের জেলাশাসক হেম কুমার ছেত্রী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ঝুঁকি থাকায় আমরা লাচেনে কোনও পর্যটককে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছি না। কেবলমাত্র স্থানীয় লোকজনকেই সেদিকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও আমাদের পক্ষ থেকে সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে গুরুদংমার পর্যন্ত রাস্তা ঠিক রাখা যায়। তবে যেহেতু লাগাতার ধসের জেরে এই রাস্তা ভঙুর হয়ে গিয়েছে তাই ঝুঁকি এড়াতে আপাতত সেদিকে কাউকে না পাঠানোই শ্রেয়।’
প্রসঙ্গত এর আগে গত ১০ মে পর্যটন এবং অসামরিক বিমান পরিবহণ দফতরের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছিল, বেহাল রাস্তার কারণে ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে না। পর্যটকদের গাড়িগুলিকে অন্যপথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গত অক্টোবর মাসে দুর্যোগের পর থেকে সিকিমে পর্যটকের সংখ্যায় হঠাৎ করেই অনেকটা কমে গিয়েছিল। যা রাজ্যের পর্যটন ব্যবসা থেকে আসা আয়েও গুরুতর প্রভাব ফেলেছিল।
সামগ্রিক এই ঘটনায় সিকিমের পর্যটন এবং অসামরিক পরিবহণ দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে,২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর যেখানে ১ লাখ ১৭৪ জন পর্যটক বেড়াতে গিয়েছিলেন, তা অক্টোবরেএকধাক্কায় কমে দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৯০৫-এ। বিদেশ থেকে আগত পর্যটকদের সংখ্যা ৩ হাজার ৭৪৪ থেকে একমাসে কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯১২-তে।