ডাঃ তমাল বিশ্বাস
রাতে আরামদায়ক এবং পর্যাপ্ত ঘুম হয় না অনেকেরই। সেক্ষেত্রে দুপুরে ঘণ্টাখানেকের ঘুমে সেই ঘাটতিটা মেটান অনেকেই। এখন প্রশ্ন হল দিনের বেলায় এই ঘুম স্বাস্থ্যের পক্ষে কতটা উপকারী?
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, আমেরিকান জেরিয়াট্রিক্স সোসাইটির জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ৩০-৯০ মিনিটের ঘুম প্রাপ্তবয়স্কদের মস্তিষ্কের জন্য উপকারী। তবে এক ঘণ্টার বেশি হলেই সমস্যা হতে পারে। ভারতীয় চিকিৎসকেরাও জানাচ্ছেন, ‘কিছু লোকের জন্য দুপুরে ঘুমনোটা রিসেট বোতামের মতো কাজ করে। ঘুম থেকে উঠে খুবই সতেজ বোধ করেন কেউ কেউ। ফ্রেশ হয়ে দিন সম্পূর্ণ করতে পারেন তাঁরা। যদিও হালকা ঘুম অনেক সময় গভীর ভাবে ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাসকে নষ্ট করে দেয়, তবু তন্দ্রার ফলে অনেকেরই ক্লান্তি, ঘুমের জড়তা কেটে যায়।’
একইসঙ্গে তাঁরা এও জানাচ্ছেন, তন্দ্রা ব্যক্তিকে বিভিন্ন উপায়ে উপকার করতে পারে। দুপুরে স্বল্প ঘুম শিথিলতা, ক্লান্তি হ্রাস করে। মস্তিষ্ককে সতর্ক রাখে, মেজাজ ভাল রাখে, স্মৃতিশক্তি জোরালো হয়। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যাঁরা শিফটে কাজ করেন, এবং যখন-তখন কাজে বসতে হয়, ঘুম হয় না ভাল মতো, তাঁদের জন্য এই স্বল্প নিদ্রা বা ন্যাপ বিশেষভাবে উপকারী। কর্মক্ষমতা বাড়তে পারে এর ফলে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দুপুরে বেশি ঘুমিয়ে নিলে রাতের ঘুমে সমস্যা হতে পারে। এই ন্যাপ যদি ১৫-২০ মিনিটের হয়, তাহলে সবথেকে ভাল। দুপুরের প্রথমার্ধে ঘুমনো উচিত। কারণ সন্ধ্যা হয়ে গেলেই তা ঘুমের চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
ফলে ন্যাপ হওয়া উচিত ২০-৩০ মিনিটের। এটা এক একজনের ক্ষেত্রে এক একরকম। তবে ছোট ঘুমই বাঞ্ছনীয়। দুপুর ৩টে বেজে যাওয়ার পর না ঘুমনোর পরামর্শই দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। সঙ্গে এও জানাচ্ছেন, দুপুরে বেশি ঘুমলে মের চক্র ব্যাহত হতে পারে এবং অনিদ্রায় ভুগতে পারেন। অনেক গবেষণায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে দিনের বেলা এক ঘণ্টার বেশি ঘুমের সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, হজম সমস্যাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে দুপুরে ঘুমনোর ক্ষেত্রে সময়সীমাই আসল। অ্যালার্ম সেট করুন। সেই মতো ঘুম থেকে উঠে পড়বেন। দুপুর ৩টের মধ্যে উঠে পড়বেন। আর ঘুমনোর সময় আপনার সমস্ত উদ্বেগ দূরে রাখুন কারণ এর মূল উদ্দেশ্য হল আপনার শরীর এবং মনকে চাঙ্গা করা।
পাশাপাশি অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলুন এবং দুপুর ৩টের পর ক্যাফিন থেকে দূরে থাকুন। এতে রাতের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে।