কাজল সিনহা
কার্তিক মহারাজকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে দ্বিমত প্রকাশ করতে দেখা গেল না প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে। অথচ, বাংলার রাজনীতিতে মমতার তীব্র বিরোধী বলে পরিচিত অধীর। এমনকি হাইকমান্ডের হুঁশিয়ারির পরেও এ ব্যাপারে তাঁকে নরম করা যায়নি। কিন্তু সোমবার অধীরও স্পষ্ট ভাষা জানিয়ে দেন, কার্তিক মহারাজের ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে মূল্যায়ন তার সঙ্গে তাঁর মতের ফারাক নেই।
কার্তিক মহারাজের কর্মকাণ্ড মুর্শিদাবাদ জেলা তথা বহরমপুরেই বেশি। তৃণমূল সুপ্রমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠানো প্রসঙ্গে প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী জানান, টসে যাঁর যা ইচ্ছা করতেই পারেন। তবে যাঁর কথা বলছেন, তিনি এখানে সেভাবেই পরিচিত। তাঁর চরিত্র মোটেই সাধুসন্ত সুলভ নয়।’ তাঁর সংযোজন, ‘তাঁর পরিচিতি নিয়ে এখানে বহু মানুষের মনে প্রশ্ন রয়েছে। সে সরাসরি রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসাবে এলাকার মানুষের কাছে পরিগণিত হয়।’
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার আরামবাগের গোঘাটের সভা থেকে। এই সভা থেকে মমতা বলেন, ‘সব সজ্জন সমান হয় না। সব সাধুও নয়। আমাদের মধ্যেই কি সবাই সমান আছেন? আমি আইডেনটিফাই করেছি বলেই বলছি।’ কার্তিক মহারাজকে উদ্দেশ্য করে সেই সভামঞ্চ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি ভারত সেবাশ্রম সংঘকে অনেক সম্মান করতাম। কিন্তু যে লোকটা তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেন না তাঁকে আমি সাধু বলে মনে করি না।’
এর পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান কার্তিক মহারাজ। প্রথমে তিনি মমতার উদ্দেশে বলেন, ‘ওঁর চৈতন্য হোক।’ এরপর এও বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। পাল্টা আমিও চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। আমার সঙ্গে কোনও ডন নেই, গুন্ডাও নেই। আমি যদি কোনও বুথে তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে না দিয়ে থাকি তাহলে প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন? আমি একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, আইনজীবীদের জানিয়েছি, আইন মেনেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ সোমবার জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন কার্তিক মহারাজ।
মুর্শিদাবাদের স্থানীয় রাজনীতিতে কার্তিকের প্রভাব রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। কারও কারও মতে, বিজেপির প্রচারে এবার কার্তিকের বিশেষ ভূমিকা ছিল। হতে পারে অধীরের ক্ষোভও সেই কারণে। এদিন অধীর চৌধুরী বলেন, ‘রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ দেশের সেবা করে। গোটা পৃথিবী জুড়ে তাদের সংগঠন রয়েছে। তার মধ্যে কি বিচ্যূতি নেই। অবশ্যই আছে। আমরা বক্তব্য একটাই, যাঁরা সাধু বা সন্ত তাঁদের কোনও রাজনৈতিক মঞ্চে যাওয়া উচিত নয়। তাতে সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।’