পার্থ রায়
তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁকে ‘সেন্সর’ করা হয়। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁকে সেন্সর করা হল।
এই ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁকে প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। আগেই তাঁকে প্রচার শেষ করতে হবে। মঙ্গলবার (২১.০৫.২০২৩) বিকেল পাঁচটা থেকে কাল (বুধবার ২২.০৫.২০২৩) বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কোনও প্রচার করতে পারবেন না অভিজিৎ। ফলত বলাই চলে ভোটের আগে বড় ধাক্কা খেলেন বিজেপির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল তৃণমূল। একইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। এর পাশাাপাশি সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে অবিলম্বে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজাও। এই বিষয়ে মন্ত্রী শশী পাঁজা লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর কত দাম, এমন কথা বলার আপনাকে সাহস কে দিল? একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এবং জননেত্রী ভারতের। এটা আমার কল্পনার বাইরে। লজ্জা করে না। দ্রুত ক্ষমা চান।’ এরপরই কড়া পদক্ষেপ করে কমিশন। এরপরই কমিশনের তরফ থেকে মঙ্গলবার তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। কমিশনের মতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করেছে। এ দিন কমিশন দুটি বিষয় উল্লেখ করছে। যেহেতু গোটা নির্বাচনে একাধিক মহিলা প্রার্থী লড়াই করছেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে কোনও রকম অসম্মানজনক মন্তব্য কমিশন বরদাস্ত করবে না। আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এ দিনের চিঠিতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অতীতের পেশার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে। তাদের বক্তব্য, একজন শিক্ষিত মানুষ কীভাবে এমন মন্তব্য করতে পারেন? অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কমিশনের শোকজ নোটিসে যে উত্তর দিয়েছিলেন তাতে সন্তুষ্ট হয়নি কমিশন। পাল্টা তাদের বক্তব্য, এই উত্তরের মাধ্যমে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শিকার করে নিয়েছেন তিনি এই মন্তব্য করেছেন। তারপরই কড়া পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “কমিশনের যদি মনে হয় অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য কারোর সম্ভ্রমে আঘাত করেছে সেই মতো কমিশন তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমরা প্রথমে যেটা বলেছিলাম যে কোনও ভাবেই হোক তৃণমূল কংগ্রেস অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যকে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করেছে।” অপরদিকে, তমলুকের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘একজন প্রাক্তন বিচারপতি যিনি বিজেপির আকালের বাজারে তাদের বাঙালি-ভদ্রলোক মুখ হতে চেয়েছিলেন তিনি তার জীবনের প্রথম নির্বাচনেই কেবল কুকথার জন্য শাস্তি পেলেন। বিজেপির কপালটাই পোড়া।’