সন্ন্যাসীরা রাজনীতিতে অংশ নেয় না, জানাল রামকৃষ্ণ মিশন

রাজ্যে সাধু-সন্ন্যাসীদের একাংশকে ‘অপমান করা’ নিয়ে এবার মুখ খুলল রামকৃষ্ণ মিশন। মঙ্গলবার এই বিষয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের পক্ষ থেকে স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজ বলেন, ‘আমরা একটি অরাজনৈতিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। আমাদের যাঁরা সন্ন্যাসী-ব্রহ্মচারী, তাঁরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন না। এমনকী, তাঁরা ভোটাধিকারও প্রয়োগ করেন না। ভোটদানে বিরত থাকেন। এই নির্দেশ স্বামীজি মাহারাজ আমাদের দিয়ে গিয়েছেন, সেটি আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করি।’ সুবীরানন্দ মহারাজ আরও বলেন, ‘আমাদের ভক্তরা ভোটের বিষয়ে সতন্ত্র। সেই বিষয়ে ভক্তদের কী করণীয়, বা কী করণীয় নয়, তা নিয়ে কোনও উপদেশ দিই না। কোনও ফতোয়া আমরা জারি করি না।’

এদিকে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বাঁকুড়ার ওন্দার দলীয় প্রার্থীয় অরূপ চক্রবর্তী এবং সুজাতা মণ্ডবের সমর্থনে আয়োজিত সভামঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে নই, কেন একটা ইনস্টিটিউশনের বিরুদ্ধে হব? মহারাজ অসুস্থ ছিলেন, আমি তো কয়েকদিন আগেও দেখতে গিয়েছিলাম। আমি বলেছি ২-১ জনের কথা। সাগরে ভারত সেবাশ্রম সংঘের অফিস আছে, আশ্রম আছে, ওরা সত্যিই আমায় খুব ভালোবাসে ও মানুষের কাজ করে। আমি নির্দিষ্ট একজনের নাম বলেছিলাম। তাঁর নাম কার্তিক মহারাজ। তিনি আমাদের এজেন্ট বসতে দেননি। ভোটের দু’দিন আগে মুর্শিদাবাদে যে অশান্তি হয়েছিল, তাঁর হোতাও ছিলেন তিনি, আমি সেই কারণে বলেছিলাম।’

প্রসঙ্গত, সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আগে অধীর কংগ্রেস করতেন, এখন বিজেপি করেন। মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে যেখানে ভোটের দু’দিন আগে অশান্তি হয়েছিল, সেখানেই কার্তিক মহারাজের আশ্রম। তিনি আশ্রম চালান, কোনও আপত্তি নেই। আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম, ওখানে তৃণমূলের এজেন্ট নেই কেন? বলল কার্তিক মহারাজ বলেছে। ওখানে কিছু লোককে খেপিয়েছে, যাঁরা ছানা ব্যবসায়ী। খবর আমিও রাখি।’

উল্লেখ্যে সারা দেশ তথা বিশ্বজুড়ে সেবাকার্যে নিয়োজিত রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন। স্বামী বিবেকানন্দের ‘জীব জ্ঞানে শিব সেবা’র আদর্শ নিয়ে বিশ্বজুড়ে কাজ করে চলেছে এই প্রতিষ্ঠান। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা যে কোনওরকম জরুরি পরিস্থিতিতে জনসেবায় বারাবেরেই এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে তাদের। এছাড়াও শিক্ষাদানের ক্ষেত্রেও একটা বিশেষ ভূমিকা রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + four =