এক ঘণ্টার টানা বৃষ্টিতে ভাসল কলকাতা। গত দু’দিন ধরে ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হয়েছিল রাজ্যবাসীর। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী বুধবার সকাল থেকে রোদের তেজ অনেকটাই কম ছিল। তবে বেলা বাড়তেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকার আকাশ ঢাকে কালো মেঘে।এরপরই ঝেপে বৃষ্টি নামে একাধিক এলাকায়। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়া। এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই বুধবার দুপুরে বিপর্যস্ত হয় শহরের জনজীবন। অন্তত ১১টি রাস্তায় জমে জল। সঙ্গে তৈরি হয় তীব্র যানজট। সুধু কলকাতাই নয়, কলকাতার আশপাশের জেলাতেও হয় বৃষ্টি।
বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ কলকাতার বিভিন্ন অংশে শুরু হয় বৃষ্টি। সঙ্গে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া প্রবাহিত হয়েছে। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির কারণে কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, মহাত্মা গান্ধি রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, নেতাজি সুভাষ স্ট্রিট (ক্লাইভ স্ট্রিট), ব্রেবর্ন রোড, এজেসি বোস রোড, লালবাজার স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, থিয়েটার রোড, বিধান সরণি, আমহার্স্ট স্ট্রিটে জল জমেছে। গরমের ছুটির কারণে বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ। সে কারণে স্কুল, কলেজ ফেরত পড়ুয়াদের তেমন সমস্যায় পড়তে হয়নি। দুপুরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে অফিস যাতায়াতে তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। তবে প্রচণ্ড ঝড় বৃষ্টির জেরে বালি নিমতলায় জিটি রোডের উপর গাছ ভেঙে পড়ে পুরোপুরি জিটি রোড বন্ধ হয়ে যায়। একইসঙ্গে বৃষ্টির কারণে হাওড়া স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে সাবওয়েতে জমে জল। কলকাতার বহু রাস্তায় জল জমার কারণে যান চলাচল বিঘ্নিত হয়। কোথাও কোথাও তৈরি হয় তীব্র যানজট। এদিকে শহরের রাস্তায় জল জমার কারণে আবার প্রশ্নের মুখে পুরসভা। নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসীদের একাংশ।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বোচ্চ পারদ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি ছুঁতে পারে। এরপরে ২৪ মে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ২৫ মে পারদ নেমে ৩৫ ডিগ্রির ঘরে আসতে পারে। ২৬ মে শহরের সর্বোচ্চ পারদ ৩১ ডিগ্রিতে নামতে পারে। এরপর ২৭ তারিখ ৩২ ডিগ্রি এবং ২৮ মে ৩৪ ডিগ্রি হতে পারে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আগামী ক’দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকতে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এরপর ২৫ মে থেকে তা নেমে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকতে পারে।
পাশাপাশি মৌসম ভবনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমী বায়ুর অগ্রসরের জন্য পরিস্থিতি অনুকূর রয়েছে। এই আবহে মলদ্বীপ, কোমোরিন এবং দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর হয়ে বর্ষা আরও এগিয়ে আসছে। অন্যদিকে পূর্ব বাংলাদেশের ওপরে বর্তমানে একটি ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করছে। একটি অক্ষরেখা সেই ঘূর্ণাবর্ত থেকে হরিয়ানা পর্যন্ত বিস্তৃত। এই পরিস্থিতিতে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার সহ পূর্ব ভারতে বৃষ্টি জারি থাকবে আগামী ৭ দিন।