জয়নগর থেকে বিজেপির তৃতীয় প্ল্যান নিয়ে মুখ খুললেন মমতা

অলোকেশ ভট্টাচার্য

 

লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির দুটি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার শুক্রবারের জয়নগরের সভা থেকে বিজেপির ‘তৃতীয় প্ল্যান’ নিয়ে মুখ খুলতে দেখা গেল তৃণমূল সুপ্রিমোকে। এদিন জয়নগরে নির্বাচনী প্রচারের একটি সভা থেকে এই নিয়ে বিশেষ বার্তাও দেন তিনি।

প্রসঙ্গত, জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী প্রতিমা মণ্ডলের সমর্থনে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় দলীয় প্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য রাখার সময়, মমতা বলেন, ‘এঁরা কয়েকদিন আগে প্ল্যান এ সন্দেশখালি নিয়ে চক্রান্ত করেছিল। আমাদের প্রিয় মা-বোনদের সম্মানহানি করার চেষ্টা করেছিল। আমি ওঁদের ধিক্কার জানাই। প্ল্যান বি, দাঙ্গা করার চেষ্টা করেছিল। সেটা আমরা আটকে দিয়েছি। এবার ওঁরা প্ল্যান সি করেছে।’

প্রসঙ্গত, দু’দিন আগেই কলকাতা হাইকোর্টের একটি রায়ে রাজ্যের প্রায় ১৫ লাখ ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের কথা বলে আদালত। এরপর আদালতের এই রায়কে ‘মানি না’ বলে জনান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এখানেই মমতার চেখো ধরা পড়ছে বিজেপি-র প্ল্যান সি-এর পরিকল্পনা। এই প্রসঙ্গে মমতা এদিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে বলে বেড়ালেন, সংখ্যালঘুরা তফসিলিদের সব জমি কেড়ে নেবে।’ এরই রেশ ধরে মমতা এও জানতে চান, ‘আপনার এটা বিশ্বাস করেন সংখ্যালঘুরা তফসিলি মানুষের সংরক্ষণ কেড়ে নেবেন? আপনারা এটা বিশ্বাস করেন?’

এরপরই প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘এঁদের আসল প্ল্যানটা এনআরসি করে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া, সিএএ করে বিদেশি বানিয়ে দেওয়া এবং তৃতীয় ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করা।’ এরপরই সভা মঞ্চ থেকে তফসিলিদের অধিকার কেড়ে দেওয়ার চক্রান্ত যে প্রধানমন্ত্রী মোদির তাও স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী।  করছে, আমরা নই। এরপরই ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের  রায় প্রসঙ্গে জানান, ‘বলে, ১৫ লাখ সার্টিফিকেট বাতিল হবে। এটা একটা রায় হল? এই রায় আমরা মানি না। একটা সার্টিফিকেট করতে গেলে কত কষ্ট করতে হয়। এটা চলবে, আপনারা চিন্তা করবেন না। আমরা উচ্চ আদালতে যাব, আমি যতদিন বেঁচে আছি, মানুষকে তাঁদের অধিকার দিয়ে ছাড়ব।’

উল্লেখ্য, দু’দিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট একটি পর্যবেক্ষণে জানায়, ২০১০ সালের পর থেকে যে ওবিসি সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়েছে, তা পুরোপুরি আইন মেনে বানানো হয়নি। এটা ১৯৯৩ সালের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস আইনের পরিপন্থী বলে জানানো হয়। রাজ্যের প্রায় ১৫ লাখ সার্টিফিকেট বাতিল করার কথা জানায় হাইকোর্ট। এদিকে, এই রায় প্রকাশিত হওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই রায় তিনি মেনে নিতে পারছেন না, এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যেতে চায় রাজ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − ten =