ডাঃ তমাল বিশ্বাস
বাচ্চারা অনেকেই অ্যাসিডিটিতে বেজায় কষ্ট পায়। আর সন্তানকে এই ধরনের সমস্যায় ভুগতে দেখেই মা-বাবারা চট করে তাদের খাইয়ে দেন ওষুধ। তাতে দ্রুত সমস্যা কমে যায় ঠিকই, তবে মূল থেকে সমস্যাকে উপড়ে ফেলা সম্ভব হয় না।
তাই বিশেষজ্ঞরা অ্যাসিডিটিতে ভোগা বাচ্চাদের বাবা-মাকে সন্তানের ডায়েট নিয়ে সাবধান হওয়ার পরামর্শ দেন। এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম কর্তব্য় হল, যত দ্রুত সম্ভব বাচ্চাদের ফাস্টফুডের থেকে দূরে রাখতে হবে। পরিবর্তে তার পাতে জায়গা করে দিতে হবে কিছু অ্যাসিডিটি নিবারণকারী খাবারকে। আশা করা যায় এতে দ্রুত সুস্থ থাকবে সন্তান।
এই তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে মধু। কারণ এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার। আর এই উপাদান ছোটদের একাধিক সমস্যা থেকে রক্ষা করে। শুধু তাই নয়, মধুতে উপস্থিত কিছু উপাদান পেটের অ্যাসিডকে উপরের দিকে উঠতে দেয় না। তাই মধু খেলে অনায়াসে অ্যাসিডিটিকে বাগে আনা যায়। আর সেই কারণে এখনই সন্তানকে নিয়মিত মধু খাওয়ান।
সন্তান নিয়মিত অ্যাসিডিটিতে ভুগলে তাকে জোর করে লেবু জাতীয় ফল খাওয়াবেন না। এই ভুলটা করলে বুক জ্বালার মতো অসুখের সম্ভাবনা বাড়বে। তার বদলে তাকে খাওয়াতে পারেন আপেল, কলা, আঙুর, ন্যাশপাতি, তরমুজের মতো অত্যন্ত উপকারী কিছু ফল। এইসব নন সাইট্রাস ফ্রুটের গুণে অ্যাসিডিটিকে পিছনে ফেল দ্রুত সেরে উঠবে সন্তান।
এদিকে আবার অনেক বাচ্চাই সবজি খেতে চায় না। আর বাবা-মায়েরাও সন্তানের এই ভুল আচরণ মেনে নেন। যার ফলে পেটের সমস্যায় ভুগতে থাকে বাচ্চা। তাই পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাওয়ার আগেই সন্তানকে নিয়মিত মরশুমি সবজি খাওয়ান। কারণ এই সবজিতে রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। আর এই উপাদান কিন্তু অ্যাসিডিটিকে বাগে আনার কাজে সিদ্ধহস্ত। তাই তো বিশেষজ্ঞরা বাচ্চাদের পাতে রোজ রোজ সবজি রাখার পরামর্শ দেন।
ময়দার তৈরি যে কোনও খাবার কিন্তু পেটের জন্য ক্ষতিকর। এমনকী বেশি পালিশ করা চালের ভাতও অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। তাই সন্তানের ডায়েট থেকে এসব খাবার বের করে দিন। পরিবর্তে তাকে নিয়মিত ব্রাউন রাইসের ভাত, আটার রুটি, ওটস, ডালিয়ার মতো হোল গ্রেইন খাবার খাওয়ান। এই কাজটা করলেই ছোট্ট সোনার অন্ত্রের হাল ফিরবে। ফলে অচিরেই দূর হবে গ্যাস, অ্যাসিডিটির মতো জটিল সমস্যা।
শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি হলে একাধিক জটিল রোগের ফাঁদে পড়তে পারে সন্তান। তাই সন্তানের অ্যাসিডিটিতে ভুগলেও তাকে নিয়মিত ডিম, মাছ, মুরগির মাংস খাওয়াতেই হবে। কারণ এইসব প্রোটিন রিচ খাবার হজম করা খুবই সহজ। এর পাশাপাশি এসব খাবার খেলে অন্ত্র এবং পাকস্থলীও থাকে সুস্থ-সবল। তাই আর দেরি না করে আজ থেকেই এইসব খাবারের সঙ্গে সন্তানের বন্ধুত্ব পাতিয়ে দিন। ব্যস, তাতেই উপকার মিলবে হাতেনাতে।