যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব়্যাগিংয়ের কারণে প্রথম বর্ষের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় শাস্তি পেতে চলেছেন প্রায় ৩৮ জন অভিযুক্ত। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির। গত বছর ডিসেম্বর মাসে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটিতে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তটি কর্মসমিতির বৈঠকে পাস করানোর প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ ছিল। এরপর গত ২২ এপ্রিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হন ভাস্কর গুপ্ত। এরপর তিনি শুক্রবার কর্মসমিতির বৈঠক ডাকেন। ওই বৈঠকেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে। বৈঠকে উপাচার্য এও বলেন, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওই ছাত্রের জন্য আমরা কিছুই করতে পারিনি। এখন অন্তত কিছু করাটা আমাদের কর্তব্য ছিল। শাস্তির সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। দেশের আইনকানুন তো আমাদের হাতে নেই। আমাদের তরফে যা যা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সবই গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও তার ভিত্তিতে আন্টি র্যাগিং স্কোয়াডের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, চারজন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করা হবে। তাঁরা হলেন, সত্যব্রত রায়, মহম্মদ আরিফ, মনোতোষ ঘোষ ও দীপশেখর দত্ত। আরও ৫ জন ছাত্রকে ৪টি সেমেস্টার তথা দুই বছরের জন্য সাসপেন্ড ও হস্টেল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। ২৫ জনকে ১ সেমেস্টার তথা ছয়মাসের জন্য সাসপেন্ড ও হস্টেল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। এই সব সিদ্ধান্তই গৃহীত হয় এদিনের কর্মসমিতির বৈঠকে। এ ছাড়া সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার ছাত্র সংসদ ফেটসুর প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরিত্র মজুমদার, যিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত, তাঁকে ছয় মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে। পিএইচডি ফেলোশিপ নিভর্র করে উপস্থিতির হারের উপর। সেক্ষেত্রে ৬ মাসের সাসপেন্ড থাকার কারণে অরিত্রর ফেলোশিপ বাতিল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনাও রয়েছে। পাশাপাশি, ফেটসুর দুই প্রাক্তন পদাধিকারী ও বর্তমানে প্রাক্তন পড়ুয়া সৈকত শিট ও গৌরব দাসের আজীবন ক্যাম্পাসে ঢোকা নিষিদ্ধ। আর এক পড়ুয়া রুদ্র চট্টোপাধ্যায়কে এক মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হবে।