মাত্র ২৫০ কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল

মে মাস মানেই ঘূর্ণিঝড়, এমনই একটা মিথ এবার তৈরি হতে চলেছে বঙ্গে। তিন বছর আগে ঠিক একই সময় বাংলাকে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছিল ইয়াস। আর এখন থেকে ১৫ বছর আগে বাংলার জনজীবনকে ভেঙে চুরমার করে দিয়ে য়ায় আয়লা।আর এবার আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে এগিয়ে আসছে রেমাল।আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গোটা বাংলাতেই প্রভাব পড়বে ঘূর্ণিঝড় রেমালের। সঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, বাংলা থেকে মাত্র ২৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে রেমাল। শনিবার রাতেই বঙ্গোপসাগরের উপরে জন্ম নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। তা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে বাংলার দিকে। আজ, রবিবার মধ্য রাতেই ঘূর্ণিঝড় সাগরদ্বীপ ও বাংলাদেশের খেপুপাড়ার মাঝে ল্যান্ডফল করতে পারে। তার জেরেই বন্ধ কলকাতা বিমান বন্দর। গোটা দেশ জুড়েই বাতিল বহু বিমান চলাচল। বাগডোগরা থেকেও কলকাতা সমস্ত বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই হাওড়া, শিয়ালদহ শাখায় বাতিল হয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ লোকাল ট্রেন। শনিবারই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে পূর্ব রেল। এবার একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলেও। দিঘা, পুরীগামী অনেক ট্রেন বাতিলের ঘোষণা করা হয়েছে দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তি। একদিন আগেই রাজ্য পরিবহণ দফতরের নির্দেশ দিয়েছে। হাওড়া কলকাতার মধ্যে ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখা হচ্ছে। হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান বাপি মান্না জানিয়েছেন, এই দু’দিন কোনও লঞ্চ চলবে না। লঞ্চগুলিকে আর্মেনিয়ান ঘাট এবং হাওড়া ঘাটে মোটা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এমার্জেন্সির জন্য লঞ্চের কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে রেমালের প্রভাবে উত্তরেও বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্বাবনা আছে। পাহাড়ের নদীগুলি ফুঁসে উঠতে পারে। হড়পা বান আসতে পারে এই আশংকায় আবহাওয়া দফতর থেকে দার্জিলিং এবং কালিম্পং ছাড়াও উত্তরের বিভিন্ন জেলাগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।রেমালের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয় দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। এদিকে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফ থেকে রবিবার লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনায়। লাল সতর্কতা জারি রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরেও। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ৯০ কিলোমিটার বেগে কলকাতায় বইবে ঝোড়ো হাওয়া। পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। দুই ২৪ পরগনায় প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমানে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার  বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সর্বোচ্চ প্রতি ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া।

এরপর সোমাবার  ঘূর্ণিঝড় ওপরের দিকে এগোবে। তারেই জেরে সোমবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ জেলায়। প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। কলকাতা ও উত্তর-দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। এই তিন জেলায় সোমবার সর্বোচ্চ প্রতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। সোমবার বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় ভারী বৃষ্টি। সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ঝড় হতে পারে। মালদহ, দুই দিনাজপুরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই তিন জেলায় সর্বোচ্চ প্রতি ঘণ্টায় ৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে। কোচবিহার, জলপাইগুড়িতেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

এরর মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি বাড়বে উত্তরবঙ্গে। উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার পর্যন্ত থাকবে এই ঝড়ের প্রভাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four − 1 =