প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মাথায় নিয়েও যাদবপুরের প্রার্থী শায়নীর হয়ে প্রচারে দেখা গেল তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যাদবপুরে ভোটের প্রচারে গিয়ে নাম না করে দলের বিদায়ী তারকা সাংসদ মিমি চক্রবর্তীর প্রসঙ্গ টানেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর হরিনাভিতে নির্বাচনী প্রচারসভা থেকে প্রার্থী পরিচয় করাচ্ছিলেন মমতা। সায়নীকে কাছে ডেকে, তাঁর হাত ধরে উঁচু করে বলেন, ‘আমার প্রার্থী সায়নী। সায়নীকে দিয়েছি এই কারণে, যে আগের বার আপনারা অতটা সার্ভিস পাননি।’ তবে এটা ঠিক যে ২০২৪-এ তৃণমূল প্রার্থী তালিকায় সায়নী অন্যতম তারকা মুখ। এককথায়, সেলেব-নেত্রী।
রবিবার হরিনাভির সভা থেকে মমতা যাদবপুরের বিদায়ী সাংসদের নাম না করেই স্বীকার করে নিলেন মিমি সাংসদ থাকাকালীন যাদবপুরবাসী সেভাবে পরিষেবা পাননি। যদিও এর জন্য টলি-নায়িকা মিমিকে দায়ী করছেন না তিনি, বরং তৃণমূলেরই ‘দোষ’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সায়নীকে পাশে নিয়ে মমতা বলেন , ‘মিমির অবশ্য কোনও দোষ ছিল না। তিনি নিজের ফিল্ম জগতে ব্যস্ত। এটা আমাদেরই দোষ ছিল। সে জন্য আমরা শুধরে নিয়েছি। সায়নী এলাকায় পড়ে থেকে লড়াই করবেন এবং দাঁতে দাঁত দিয়ে লড়াই করবেন উন্নয়নের কাজে।’
একইসঙ্গে এও জানান, তিনি মিমিকে ‘না’ করেননি। বরং মিমি অন্য কোনও জায়গা থেকে দাঁড়াবেন কি না, সেটা জানতে চেয়েছিলেন। কারণ, তিনি এবার যাদবপুরে ‘কোমর বেঁধে ঝগড়া করার লোক’ চাইছিলেন। এরই রেশ ধরে মুখ্যমন্ত্রী ততা তৃণমূল সুপ্রিমো এদিন এও জানান, ‘এখানে কেউ কেউ বড্ড বেড়েছে। এখানে নরম লোক দিয়ে হবে না। এখানে কোমর বেঁধে একটু ঝগড়া করার লোক দরকার। যাতে মানুষ বিচার পায়। যে জমিদারি দেখাবে, তার জমিদারি ভাঙার জন্যই সায়নীকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। ও স্ট্রং মেয়ে।’
প্রসঙ্গত, উনিশের ভোটে এখান থেকে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল টলি নায়িকা মিমি চক্রবর্তীকে। তারকা প্রার্থী সেবার জিতে সাংসদও হয়েছিলেন যাদবপুরের। কিন্তু মিমিকে এলাকায় না পাওয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের একাংশের মনে ক্ষোভ জন্মেছিল। এরপর ব্রিগেডের ‘জনগর্জনের’ সমাবেশ থেকে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের বাছাই ৪২-এর তালিকায় জায়গা পাননি মিমি। তাঁর জায়গায় প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূলের অপর এক তারকা মুখ সায়নী ঘোষকে।
এদিকে রবিবারের এই প্রচার সবা থেকেই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সাবধানবাণী দিতে শোনা গেল তৃণমূল সুপ্রিমোকে। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘সন্ধে ৬টার পর থেকে প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। র্যান্ডম একদিন চলবে। ভয় পাবেন না, কিন্তু সাবধানে থাকবেন।’ রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের মুখে বঙ্গবাসীকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কোথাও বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গেলে অযথা চিন্তা করার কারণ নেই। পর্যাপ্ত জেনারেটরের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে, পরিষেবা স্বাভাবিক করার জন্য ন্যূনতম সময় যাতে দেওয়া হয়, সেই ধৈর্য্যটুকু রাজ্যবাসীকে রাখার জন্য বলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে সেই সময় যাতে টিভি বা এসি না চালানো হয়, সেই পরামর্শও দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি বিদ্যুতের খুঁটিগুলির কোথায় কী অবস্থা সেদিকেও নজর রাখার জন্য বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বিশেষ বার্তাও দিতে দেখা যায় মমতাকে।