তৃণমূলের ভয়ে ভীত না হয়ে নিজের ভোট নিজে দেওয়ার বার্তা সেলিমের

‘তৃণমূল যদি ভাবে সিপিআই(এম) কর্মীদের মারধর করে হাসপাতালে ঢুকিয়ে দিয়ে ভাবে ভোট লুট করবে, তাহলে ভুল ভাবছে। মানুষ নিজের ভোট নিজে দেবেন। তৃণমূলের দুষ্কৃতী কিছু করতে পারবে না। সিপিআই(এম) কর্মীরা রাস্তায় থাকবেন। মানুষ শান্তিতে ভোট দেবেন।’ মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমনই হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেল সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে।

যাদবপুরে মতো একাধিক এলাকায় সিপিআই(এম) কর্মীদের হুমকি, হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু সিপিআই(এম) কর্মীরা সর্বত্রই নামছেন দ্রুত প্রতিরোধে। সোমবার রাতে যাদবপুরে এমন একটি ঘটনায় হামলাবাজদের আটক করে জনতা। শুধু তাই নয়, একজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন যাদবপুরের সিপিআই(এম) প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। পুলিশ টালবাহানার পরও আটক করতে বাধ্য হয় ওই দুষ্কৃতীকে। মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠক থেকে বামপন্থী কর্মীদের এই মেজাজ মনে করিয়ে দেন সেলিম।

এদিকে রাজ্যে ভোট প্রচারে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বারুইপুর এবং অশোকনগরে বিজেপি’র জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন তিনি। সন্ধ্যায় শ্যামবাজার থেকে পদযাত্রা করবেন মোদি। এই প্রসঙ্গে সেলিম জানান, ‘দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি নেই। আর নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে বিজেপি বাজারে নেই বলে তারা চুপ করে বসে থাকবে তাহলে তারা ভুল ভাবছে। মানুষ পাড়ায় পাড়ায় তৃণমূলের ছোট মস্তানদের বুঝে নেবে। কোনও পুলিশ, কমিশন কিছু লাগবে না।’ এরই রেশ ধরে

বিজেপি এবং তৃণমূলকে নিশানা করে সেলিম এদিন এও বলেন, ‘দক্ষিণ কলকাতায় বিজেপি নেই। তাই সায়রা মীনাক্ষীদের আটকানো হচ্ছে। দমদম, ব্যারাকপুর, উত্তর কলকাতায় একই দলে দু’জন করে প্রার্থী।’ উল্লেখ্য এই তিন কেন্দ্রের তিন বিজেপি প্রার্থী শীলভদ্র দত্ত, অর্জুন সিং, তাপস রায় তিনজনই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়ে টিকিট পেয়েছে। এরই রেশ ধরে তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে সেলিমের কটাক্ষ, ‘অভিষেকও যে কোন সময় তৃণমূলের ফুল থেকে বিজেপির ফুল হয়ে যেতে পারেন।’

অন্য়দিকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সেলিম বলেন, ‘তৃণমূলের লুঠ গোটা দেশে যারা লুঠ করছে তারা এখানে এসে লুঠের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে।’ এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে ধর্মকে টেনে আনার কড়া বিরোধিতা করেন সেলিম বলেন, ‘ধর্মকে রাজনীতির ময়দানে টেনে আনলে আসলে ধর্মের অপমান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী আসলে তাই করছেন।’ এরপরই কেন্দ্রকে বিদ্ধ করে সেলিম বলেন, ‘মোদি বেকারত্ব, রুটি, রুজি নিয়ে কিছু বলতে পারে না। আরএসএস চেয়েছিল প্রচারের কেন্দ্র বিন্দু হোক ধর্ম। তাই রাম মন্দির। বামপন্থীরা এবং ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ দেশের ঐক্য, মানুষের অধিকার, রুটি, রুজির প্রশ্ন দৈনন্দিন জীবন জীবীকা নিয়ে কথা বলছে। অন্যদিকে মমতা আরএসএস বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চাইছেন ধর্মীয় সংগঠন গুলিকে আক্রমণ করে।’

এছাড়াও এদিন সেলিম তাঁর বক্তব্য়ে তুলে ধরেন, সুবিধাবাদী রাজনীতি প্রসঙ্গও। বলেন, ‘বনগাঁর ভোট হয়ে গিয়েছে। এখন আর মতুয়াদের নিয়ে কোনও কথা নেই। এরা শুধু মাত্র ভোটের জন্য বিভিন্ন অংশকে ব্যবহার করে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 2 =