মাইগ্রেনের সমস্যা অনেককেই ভোগায়। রীতিমতো মাথার যন্ত্রণায় যেন মনে হয় মাথার ভিতরের শিরা উপশিরা ছিড়ে যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গ সম্প্রতি মেডিক্যাল জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত এক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এই সমস্যার পিছনে রয়েছে জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলেই বাড়ছে মাইগ্রেনে আক্রান্তের সংখ্যাও।
রিপোর্ট বলছে, শুধু মাইগ্রেন নয়, মস্তিষ্কের জটিল স্নায়ুর রোগ অ্যালঝাইমার্স-এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে জলবায়ুর পরিবর্তনে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, খুব বেশি গরম কিংবা খুব ঠাণ্ডা কোনওটিই মস্তিষ্কের পক্ষে ভালো নয়। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ঘুমের স্বাভাবিক চক্র ব্যাঘাত হয়। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্কের স্নায়ুর নানা রকম সমস্যা হতেই পারে। সারা বিশ্বে ১৯৬৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ৩৩২টি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী আবহাওয়ার পরিবর্তন স্নায়ুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, মাইগ্রেনের উপসর্গ মাথাব্যথা শুরু হওয়ার এক থেকে দু’দিন আগেই লক্ষ্য করা যায়। এটিকে চিকিৎসকদের ভাষায় ‘প্রোড্রোম’ বলা হয়। যাতে ক্লান্তি, দুর্বলতা, হতাশা, খাবার খাওয়া ইচ্ছে কমে যাওয়া, বিরক্তি, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলো নজরে আসে। এমন উপসর্গ এড়িয়ে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিসেষজ্ঞরা। তাঁদের পরামর্শ, শরীরকে হাইড্রেটেড রাখুন। দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল না খেলে মাইগ্রেনের ব্যথায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। কারণ, জল কম খাওয়ার ফলে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। তাই এই গরমে মাইগ্রেনের সমস্যাকে দূরে রাখতে দিনে অন্তত ৪ লিটার জল খান। পাশাপাশি, চড়া রোদে বাইরে বেরোনো এড়িয়ে চলাই ভাল। কিন্তু কাজে বেরোতেই হয়। সেক্ষেত্রে ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে সুতির স্কার্ফ দিয়ে মাথা, মুখ-চোখ ঢেকে রাখুন। একই সঙ্গে, মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে দূরে থাকতে তেল-মশলাদার খাবার, চা-কফি, মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। মাথা ব্যথা এড়াতে মরশুমি সবজি, ফল, আমন্ড, দানাশস্য, আদা ইত্যাদি খান।