মঙ্গলবার লোকসভা ভোট গণনা

মঙ্গলবার লোকসভা ভোটের গণনা। সারা দেশের সঙ্গে গণনা হবে বাংলার ৪২ আসনেও। এ রাজ্যে ৫৫টি গণনা কেন্দ্র থাকছে। গণনার আগে ত্রিস্তরীয় বলয়ে মুড়ে ফেলা হচ্ছে গণনাকেন্দ্রগুলি। মোট ৪১৮টি কাউন্টিং হল থাকছে। ৪ হাজার ৯৪৪টি কাউন্টিং টেবিল থাকবে। তিন লক্ষেরও বেশি পোস্টাল ব্যালট। গড়ে ১৭ রাউন্ড গোনা হবে। সর্বোচ্চ ২৩ রাউন্ড। সর্বনিম্ন ৯ রাউন্ড গণনা হবে।

শীতলকুচির ৩১০টি বুথ, দিনহাটায় ৩১৮টি বুথ। এখানে ভোট গণনা হবে ২৩ রাউন্ডে। অন্যদিকে চোপড়ার ২৫১ নম্বর বুথে সর্বনিম্ন ৯ রাউন্ডে ভোট গণনা হবে। ভোট গণনায় ২৫ হাজারের বেশি থাকছে মাইক্রো অবজার্ভার। প্রত্যেকটি কাউন্টিং টেবিলে একজন সুপারভাইজার, একজন কাউন্টিং অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং একজন মাইক্রো অবজার্ভার থাকবেন।

এবারের মোট ভোটার ৭,৬০,১০,০০৬ । এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩,৮৬,১৩,৪১৫, মহিলা ভোটার ৩,৭৩,৯৪,৮১৮, তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ১৭৭৩। মোট প্রার্থী ৫০৭ জন। এরমধ্যে পুরুষ প্রার্থী ৪৩৪ জন, মহিলা প্রার্থী ৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী একজন।

কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে ৭টি কাউন্টিং সেন্টার রয়েছে, কলকাতা উত্তর কেন্দ্রে ১টি কাউন্টিং সেন্টার রয়েছে। ডায়মন্ড হারবারে রয়েছে ৪টি কাউন্টিং সেন্টার। দার্জিলিংয়ে ৩টে কাউন্টিং সেন্টার, রায়গঞ্জে ২টি কাউন্টিং সেন্টার এবং অন্যান্য জায়গায় ১ করে কাউন্টিং সেন্টার রয়েছে।

এদিকে রাজ্যের ৫৫টি গণনাকেন্দ্রে নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ ভাবে গণনার কাজ সম্পন্ন করতে এবং গণনা কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তায় একাধিক পদক্ষেপ করেছে নির্বাচন কমিশন। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ২০০ মিটার পর্যন্ত জারি থাকছে ১৪৪ ধারা। এর পাশাপাশি গণনা কেন্দ্রগুলিতে থাকছে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয়। প্রথম পর্যায়ে থাকবে সংশ্লিষ্ট লাঠিধারী ও এএসআই পদমর্যাদার পুলিশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে সশস্ত্র রাজ্য পুলিশ এবং এরপর বাকি গণনা কেন্দ্র ঘিরে তৃতীয় পর্যায়ে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। রাজ্যের ৫৫ টি গণনা কেন্দ্রে নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে ৯২ কোম্পানি কেন্দ্রীয়, বাহিনী থাকবে ২৫২৫ জন রাজ্য পুলিশ। গণনা কেন্দ্রে প্রতি বিধানসভা পিছু একজন করে পর্যবেক্ষক থাকবেন অর্থাৎ ২৯৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ২৯৪ জন গণনা পর্যবেক্ষক থাকবেন। গণনা কেন্দ্রে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষকরাই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। এর পাশাপাশি সমগ্র গণনা কেন্দ্র-সহ তার চারপাশ সিসিটিভিতে মোড়া থাকবে। গণনা কেন্দ্রের ভিতর ওয়েব কাস্টিং হবে না, থাকবে সিসিটিভি। পোস্টাল ব্যালট গণনার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র একবারই নির্দিষ্ট ওটিপি দেখার জন্য মোবাইল ব্যবহার করবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার। এ ছাড়া গণনা কেন্দ্রের মধ্যে আর কেউই মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন না। গণনা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে গেলে একমাত্র সাদা কাগজ ও পেন ছাড়া কোন কিছু নিয়েই প্রবেশ করা যাবে না। যদি মোবাইল কারুর কাছে পাওয়া যায় তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী তা বাজেয়াপ্ত করবে এবং নির্বাচনী নিয়ম অনুযায়ী তাঁর হাজতবাস অথবা জরিমানা হতে পারে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, সকাল ৮টায় জেলায় নির্বাচনী আধিকারিকদের তত্ত্বাবধানে ইভিএমগুলিকে স্ট্রংরুম থেক গণনা হলে নিয়ে যাওয়া হবে। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকবে এই সময়। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে, নির্বাচন কমিশন স্ট্রংরুম থেকে ইভিএম মেশিন গণনা হলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে দলগুলির পোলিং এজেন্টদেরও সঙ্গে রাখবে। বিষয়টিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে। নির্বাচন কমিশন ভোট গণনার জন্য একাধিক রাউন্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মধ্যে পোস্টাল ব্যালটে প্রথম রাউন্ডে গণনা করা হবে। এরপর কোলা হবে ইভিএম। এক রাউন্ডে ১৪টি টেবিলে, ১৪টি ইভিএম একসঙ্গে খোলা হয়। ইভিএম-এ পড়া ভোট গণনা শেষ হলে প্রথম রাউন্ড সম্পন্ন হয়। তবে দুপুরের মধ্য়ে ভোটের ট্রেন্ড মোটামুটি স্পষ্ট হবে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 − 4 =