প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ অধীরের

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বঙ্গ রাজনীতিতে ইন্দ্রপতন হয়েছে অনেকগুলোই। তবে সবার আগে নিশ্চয়ই থাকবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর নাম। এবার বহরমপুর থেকে হেরে সাংসদ পদ খুইয়েছেন। এবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদও ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশও করেন তিনি। তাঁর বদলে যোগ্য কাউকে প্রদেশ সভাপতির পদে বসানোর জন্যও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে অনুরোধ করেছেন অধীর অন্তত এমনটাই সূত্রে খবর।

প্রসঙ্গত, এবার জয়ী হলে বহরমপুর থেকে টানা ছ বার জয়ী হতেন অধীর৷ তাঁর হারই সম্ভবত লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে সবথেকে অপ্রত্যাশিত ঘটনা। অধীরের কথাতেও তাই ঝরে পড়েছে হতাশা। এমন কি, তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, সে বিষয়েও স্পষ্ট করে কিছু বলতে শোনা যায়নি অধীরকে।

একইসঙ্গে কংগ্রেস নেতা অধীর এও জানান, ‘কী করব আমি জানি না। কোনও দিন রাজনীতি করা ছাড়া কিছু শিখিনি। দিল্লিতে আমি নিজেকে বিপিএল সাংসদ বলতাম৷ সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে ব্যবসা, বাণিজ্যও শেষ হয়ে গিয়েছে।’

অনেকেই বলছেন, উগ্র মমতা বিরোধিতা করতে গিয়েই নিজের সমস্যা বাড়িয়েছেন অধীর। ভোটে তো হারতে হলই, উল্টে তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাতের পথে গিয়ে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডেরই বিরাগভাজন হয়েছেন অধীর৷ এমন কি, বিপক্ষে ইউসুফ পাঠানের মতো তারকা মুখ থাকলেও অধীরের সমর্থনে প্রচারে আসেননি রাহুল গান্ধি সহ কংগ্রেসের কোনও শীর্ষ নেতা।

মুখে না বললেও দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে অভিমানী অধীর বলেন, ‘তাঁদের হয়তো মনে হয়েছে আমার পাশে দাঁড়ানোর দরকার নেই। রাহুল গান্ধি তো এখানে ন্যায় যাত্রায় এসেছিলেন। ভালই প্রচার হয়েছে। এটা দিল্লির বিষয়। আমি কিছু বলতে পারব না।’

সাংসদ পদ হারালেও এখনও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে রয়েছেন অধীর। যদিও সেই পদ ছাড়তে চান তিনি। অধীর বলেন, ‘দল এখন ব্যস্ত। আমি তো আগেই বলেছিলাম আমার বদলে অন্য কাউকে প্রদেশ সভাপতি করা হোক। কারণ সময় দিতে পারতাম না। সনিয়া গান্ধি বলেছিলেন বলে এই পদে ছিলাম। এখন দল যোগ্য কাউকে এই পদে বসাক।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের বিরোধিতা নিয়েও মুখ খুলেছেন অধীর। তাঁর সাফাই, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার কোনও ব্যক্তিগত সংঘাত নেই। দিল্লি থেকে বললে জোট হত। আমি বলেছিলাম এখানকার সরকার আমাদের দল করতে দিচ্ছে না।’

বরং তৃণমূলের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘পশ্চিমবঙ্গে তো সব দখল হয়ে গেল আর সন্ত্রাস করে কী হবে? আমার উপরে যা খুশি করুন কিন্তু কংগ্রেস করার অপরাধে কারও উপরে আক্রমণ করবেন না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen + ten =