লোকসভা নির্বাচনে ২৯টি আসনে জিতেছে তৃণমূল। আর এই ভোটযুদ্ধের সেনাপতি যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই ‘সার্টিফিকেট’ ইতিমধ্যেই দিয়েছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে মমতা আস্থা রেখেছেন অভিষেকের দূরদর্শিতা আর বিচক্ষণতার ওপর। ফলও পেয়েছেন তিনি। এই সাফল্যের পরই শহর ছেয়ে গেল নতুন পোস্টারে।
কলকাতা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে জায়গায় জায়গায় দেখা যাচ্ছে একই রকমের বেশ কিছু পোস্টার। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির ওপর লেখা, ‘গেম চেঞ্জার, দাদা’। শিক্ষক-অধ্যাপকদের নাম দেখা যাচ্ছে সেখানে। তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক ও শিক্ষক সংগঠনের নেতা মণিশঙ্কর মণ্ডলের নামও দেখা যাচ্ছে সেই পোস্টারে। এই পোস্টারেও মান্যতা পাচ্ছে অভিষেকের নেতৃত্ব।
২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পর কলকাতায় অভিষেকের ছবি দিয়ে পোস্টার পড়েছিল, যাতে লেখা ছিল ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’। এরপর ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনেও নেতৃত্ব দিয়েছেন অভিষেক। ২০২৩ সালে সাগরদিঘিতে উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর জয়ের পর ‘সাগরদিঘি মডেল’ নিয়ে যখন রাজ্যে বিরোধীরা মাতামাতি করছিলেন, তার মধ্যে ২০২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে ময়দানে নামেন অভিষেক। সেখানেও সাফল্য পান। এমনকী সেই সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস তাঁর হাত ধরেই যোগ দেন তৃণমূলে।
লোকসভা নির্বাচনে যে সাফল্য এসেছে, তাতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন ২০২৪-এর নির্বাচনেও মমতাকে দেখেই ভোট হয়েছে। তবে ‘সেনাপতি’ হিসেবে অভিষেককে তুলে ধরতে দ্বিধাবোধ করেননি মমতা। বিভিন্ন জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মধ্যেও যেভাবে মমতার মুখ, মমতার বার্তাকে প্রতিষ্ঠা করেছেন অভিষেক, তাতে দলের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে আরও। ফল প্রকাশের পর যেভাবে অভিষেককে কাছে টেনে, তাঁর কাঁধে হাত রেখেছেন, তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, আগামীদিনে অভিষেকের রাজনৈতিক দূরদর্শিতাকে কাজে লাগাতে চায় তৃণমূল। ২০২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনেও যে অভিষেকের বড় ভূমিকা থাকবে, সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। শুধু রাজ্যে নয়, ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের বৈঠকেও প্রতিনিধি হিসেবে অভিষেককেই পাঠিয়েছেন মমতা।